স্ট্রোক পরবর্তী চিকিৎসা

স্ট্রোক পরবর্তী চিকিৎসা বা করণীয়

স্ট্রোক পরবর্তী চিকিৎসা সাধারণত একটি সংযোগস্থানে ঘাড়ে চিকিৎসা, রসায়ন চিকিৎসা, শারীরিক চিকিৎসা, সামাজিক চিকিৎসা, ওয়ানস্থা চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য পরামর্শের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। স্ট্রোক একটি গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসায় আক্রান্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে আরো গুরুত্বপূর্ণ হয়, যেমন শারীরিক পুনঃস্থাপন, ভৌত ও আচার্য পুনঃস্থাপন, কথা ও ভাষা পুনঃস্থাপন, মস্তিষ্ক ক্ষেত্রে চিকিৎসা ও পুনঃস্থাপন ও মানসিক ও সামাজিক পুনঃস্থাপন। আরও কিছু মেডিকেল চিকিৎসা সাধারণত ব্যবহার হয় এমন চিকিৎসায় ব্যাপক হয়ে ওঠার পর পর্যন্ত স্ট্রোক রোগীর জন্য উপযুক্ত চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা অনুমান করা যেতে পারে।

কিছু সাধারণ চিকিৎসা পদক্ষেপ নিচে তালিকা ভুক্ত করা হলোঃ

স্থায়ী চিকিৎসাঃ

এই পদক্ষেপে স্ট্রোক পরামর্শ দিয়া হয় যা রোগীর স্থিতিকে উন্নত করার জন্য পর্যাপ্ত হতে পারে। এটি প্রশাসনিক চিকিৎসা, ঔষধ, পুনর্বাসন ও রোগীর সমর্থনের মাধ্যমে পরিপাটি করে।

ফিজিওথেরাপিঃ

ফিজিওথেরাপি স্ট্রোক রোগীদের সাধারণত ব্যবহার করা হয় যার মাধ্যমে শারীরিক ক্ষমতা, স্বাধীনতা এবং সাধারণ পদার্থের সম্পর্ক পুনর্স্থাপন করা যায়। এটি চিকিৎসাবিদের দ্বারা পরিচালিত হয় এবং শারীরিক ক্ষমতা ও স্বাধীনতা উন্নত করার জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও আয়োজন করা হয়।

বক্সিং থেরাপিঃ

বক্সিং থেরাপি স্ট্রোক রোগীদের সাধারণত ব্যবহার করা হয় যার মাধ্যমে শারীরিক ক্ষমতা, সাধারণ পদার্থের সম্পর্ক পুনর্স্থাপন এবং অনুমানিক নির্ধারণ উন্নত করা যায়। এটি একটি বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপিস্টের নির্দেশিত প্রশিক্ষণ মাধ্যমে পরিচালিত হয়।

ওয়ানস্থা চিকিৎসাঃ

ওয়ানস্থা চিকিৎসা স্ট্রোক পরিবারের সদস্যদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কাজ করে ওয়ানস্থা চিকিৎসা চিকিৎসার পরবর্তী চিকিৎসা সেটিংগের সাথে সমন্বিত করে। এটি মনোস্থান পরিবর্তন, কর্ম পুনর্বাসন ও অন্যান্য জরুরি পরিবর্তনের জন্য সামাজিক ও আচার্য পরিচালিত সাধারণত স্ট্রোক রোগীদের সাথে যুক্ত হয়।

এই উদাহরণগুলি শুধুমাত্র স্ট্রোক পরবর্তী চিকিৎসার কিছু উদাহরণ। রোগীদের চিকিৎসা প্রকারভেদ ও পরিমাণ সাধারণত রোগীর অবস্থা, চিকিৎসার সামগ্রিক প্রতিস্থাপন এবং চিকিৎসা প্রদানের পরিমাণকে ভিন্নভাবে প্রতিষ্ঠা করে। স্ট্রোক রোগীর জন্য সম্পূর্ণ চিকিৎসা পরামর্শ ও পরিচালনার জন্য সর্বদা চিকিৎসাবিদের সাথে কথা বলার জন্য উচিত।

স্ট্রোকের ধরন এবং তীব্রতার পাশাপাশি পৃথক কারণগুলির উপর জোর দেওয়া উচিতঃ

একটি প্রাথমিক স্ট্রোকের পরে, চিকিৎসা পেশাদাররা সাধারণত ব্যক্তিকে স্থিতিশীল করা এবং আরও  ক্ষতি প্রতিরোধ করার দিকে মনোনিবেশ করেন। এতে রক্ত জমাট বাঁধা দ্রবীভূত করা বা প্রতিরোধ করার জন্য ওষুধ, যেমন ক্লট-বাস্টিং ওষুধ বা রক্ত পাতলা করার ওষুধ, সেইসাথে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানো এবং অন্যান্য ঝুঁকির কারণগুলি পরিচালনা করার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

চিকিৎসার তীব্র পর্যায়ের পরে, ব্যক্তিরা প্রায়শই হারানো কার্যকারিতা পুনরুদ্ধার করতে এবং তাদের সামগ্রিক জীবনের মান উন্নত করতে পরবর্তী সময়ের মধ্য দিয়ে যায়। স্ট্রোক পরবর্তী সময়ে শারীরিক থেরাপি, পেশাগত থেরাপি, বকতৃতা এবং ভাষা থেরাপি, এবং অন্যান্য বিশেষ হস্তক্ষেপ জড়িত করতে পারে। নির্দিষ্ট লক্ষ্য এবং পু পরবর্তী সময়ের সময়কাল ব্যক্তির চাহিদা এবং ক্ষমতার উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হবে।

এটি লক্ষণীয় যে, স্ট্রোকগুলি তাদের প্রভাবের পরিপ্রেক্ষিতে এবং পুনরুদ্ধারের পরিমাণ অর্জনযোগ্য হতে পারে। কিছু ব্যক্তি সম্পূর্ণ পুনরুদ্ধার অনুভব করতে পারে, অন্যদের দীর্ঘস্থায়ী প্রতিবন্ধকতা বা অক্ষমতা থাকতে পারে। পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়াটি সপ্তাহ, মাস বা এমনকি বছরও নিতে পারে।

ভবিষ্যতের স্ট্রোক প্রতিরোধ করার জন্য, ব্যক্তিদের প্রায়ই জীবনধারা পরিবর্তন করতে এবং অন্তর্নিহিত ঝুঁকির কারণগুলি পরিচালনা করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এর মধ্যে স্বাস্থ্যকর খাদ্য বজায় রাখা, নিয়মিত ব্যায়াম করা, ধূমপান ত্যাগ করা, স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ করা এবং উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং অ্যাট্রিয়াল ফাইব্রিলেশনের মতো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

আপনি বা আপনার পরিচিত কেউ যদি স্ট্রোকের সম্মুখীন হন বা চিকিৎসার পরে স্ট্রোক সম্পর্কে উদ্বেগ থাকে, তবে স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের সাথে পরামর্শ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যারা নির্দিষ্ট পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে ব্যক্তিগত পরামর্শ এবং নির্দেশনা প্রদান করতে পারেন।

স্ট্রোক রুগীর ব্যায়ামঃ

স্ট্রোক রুগীদের জন্য ব্যায়াম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে, আপনার স্ট্রোকের ধরণ এবং শারীরিক অবস্থার উপর নির্ভর করে ব্যায়ামের ধরণটি পরামর্শ দেওয়া হবে। স্ট্রোক পরামর্শদাতা বা ফিজিওথেরাপিস্ট আপনার জন্য  একটি ব্যায়াম প্রোগ্রাম তৈরি করতে সহায়তা করতে পারেন। একটি সাধারণ কার্যক্রম নিম্নলিখিত জিনিসগুলি অন্তর্ভুক্ত করতে পারে:

শ্বাস-প্রশ্বাস ও শ্বাসকষ্ট নিয়ন্ত্রণ করার জন্য প্রাণায়ামঃ

উচ্চ আসনে বসে নিব্রাম হয়ে মনে ধরুন যেন শ্বাস বাহ্যিক এবং আপনি শ্বাস খুব মিশরিত করে ফেলতে পারেন। সামান্য শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে ধীরে ধীরে শ্বাস ছেড়ে দিন।

শক্তি এবং কাঠিন্য বৃদ্ধির জন্য ওজন সম্পন্ন ব্যায়ামঃ

একটি ফিজিওথেরাপিস্ট এর নির্দেশনা অনুযায়ী ওজন সম্পন্ন ব্যায়াম করা যেতে পারে, যা আপনাকে শারীরিক কাঠিন্য উৎপাদন করবে এবং শক্তি বৃদ্ধি করবে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় যে কোন ওজন জিনিস উঠানো, ক্রস ট্রেনার ব্যবহার করা ইত্যাদি।

স্ট্রেচিং বা শরীরের স্থিতির বৃদ্ধির জন্য ব্যায়ামঃ

স্ট্রোক পরামর্শদাতা বা ফিজিওথেরাপিস্ট দ্বারা পরামর্শ দেওয়া হলে শরীরের নির্দিষ্ট স্থানে স্ট্রেচিং ব্যায়াম করা যেতে পারে। এটি শরীরের স্থিতি বৃদ্ধি করে এবং মাসপেশিগুলির লচ্ছন বাতিল করে।

চলন্ত বা চলমান ব্যায়ামঃ

মাথার ক্ষেত্রে আপনি হাত ও পা চালাতে পারেন এবং ক্ষুদ্র মাথা পদক্ষেপ চলাচল করতে পারেন। এই ব্যায়ামগুলি স্ট্রোক রুগীদের সাহায্য করে চালনা ও স্বাধীনতা বৃদ্ধি করতে পারে।

পরামর্শঃ

এগুলি হল কেবলমাত্র একটি সাধারণ সূচি, স্ট্রোক রুগীদের জন্য ব্যায়াম নির্বাচনে আপনার স্থিতিস্থাপকের পরামর্শ মেনে চলা উচিত। স্থায়ী ব্যায়াম প্রোগ্রাম তৈরি করতে আপনি একজন ফিজিওথেরাপিস্টের সাথে যোগাযোগ রাখার কাজ করতে পারেন যেমনে পর্যায়ক্রমের ধারণা দেওয়া, ব্যায়ামের মাত্রা পরিবর্তন করা ইত্যাদি।

 

স্ট্রোক রোগীদের জন্য সঠিক খাবার মাঝে মাঝে বিভিন্ন শক্তিশালী পুষ্টিমাত্রা এবং সংমিশ্রিত পুষ্টিমাত্রা সরবরাহ করতে হবে। নিম্নলিখিত উপাদানগুলি রোগীর জন্য উচিত হতে পারেঃ

ফল এবং সবজিঃ

ফল এবং সবজি স্ট্রোক রোগীদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন ফলের পানি, সবজির পানি এবং অন্যান্য শক্তিশালী পুষ্টিমাত্রা সরবরাহ করে এবং পুষ্টিমাত্রা বৃদ্ধি করে। উত্তম ফল উদাহরণ হিসেবে পেঁপে, কিউইনো, পেয়ারা, আঙ্গুর এবং পটল প্রদান করতে পারে। সবজিতে শাকসবজি, বাঁধাকপি, স্পিনাচ, গাজর, ব্রোকলি এবং ক্যাপসিকাম সম্প্রদান করা যেতে পারে।

প্রোটিনঃ

মাংস, মাছ, ডাল, মুগ বা সোয়াবিন প্রোটিনের উত্স হিসেবে উপযুক্ত হতে পারে। উত্তম মাংসের প্রকার হতে পারে সাদা মাংস বা চিকেন। স্ট্রোক রোগীর ক্ষেত্রে মাছের গুরুত্ব অনেক বেশি হতে পারে, সর্দিন, টুনা, সালমন এবং হিলশ মাছ ভাল উদাহরণ হিসেবে গণ্য হতে পারে।

পুষ্টিমাত্রাঃ

স্ট্রোক রোগীর জন্য পুষ্টিমাত্রা সরবরাহের জন্য বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। শক্তিশালী পুষ্টিমাত্রা সরবরাহের জন্য অনানাস, ব্রোকলি, বাঁধাকপি, পেয়ারা, আঙ্গুর, আম, কিউইনো এবং পালং প্রদান করা যেতে পারে।

কাঁচা পানি বা টিউবওয়েলের পানিঃ

শরীরের ক্লান্তিভাব বা পরিবেশটা দূর করার জন্য কাঁচা পানি গ্রহণ করতে হবে। এটি মুখের দ্বারা শরীরের মধ্যের সার্কুলেশন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে এবং শরীরের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বাড়ানোর জন্য শরীরের মহাদেশ বা ভারসাম্য সরবরাহ করবে।

স্ট্রোক রোগীদের জন্য উপরোক্ত খাবারের সাথে সম্পৃক্ত হিসেবে পরিমিত মাত্রায় অবস্থা ও ক্ষেত্রটা সংজ্ঞেয় করা দরকার। সেই সাথে, স্বাস্থ্যবান খাদ্যের জন্য নির্বাচিত রুটিন হিসেবে পরামর্শ প্রদানের জন্য স্থানীয় পেশাদার চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা উচিত।

 

পরিচালনায়ঃ
ডাঃ সাইফুল ইসলাম, পিটি
বিপিটি ( ঢাবি ) , এমপিটি ( অর্থোপেডিকস ) – এন.আই.পি.এস , ইন্ডিয়া
পিজি.সি. ইন আকুপাংচার , ইন্ডিয়া
স্পেশাল ট্রেইন্ড ইন ওজন থেরাপি , ইউ.এস.এ এবং ওজোন ফোরাম , ইন্ডিয়া ।
ফিজিওথেরাপি কনসালট্যান্ট , ভিশন ফিজিওথেরাপি সেন্টার ।
পরামর্শ পেতে – 01760-636324 , 01932-797229 (সকাল ৯.০০ থেকে রাত ৯.০০ টা) 
ফেসবুকঃ ভিশন ফিজিওথেরাপি সেন্টার 
এপয়েন্টম্যান্ট নিতে ক্লিক করুনঃ