মাথা ঘোরা কমানোর উপায় । গর্ভাবস্থায় মাথা ঘোরানোর কারণ

কেন মাথা ঘোরায় ?

মাথা ঘোরা হল এমন একটি অনুভূতি যে আপনার চারপাশের জিনিসগুলি ঘুরছে বা আপনি নিজেই ঘুরছেন।মাথা ঘোরা কমানোর উপায় আমাদের জানতে হবে। মাথা ঘোরা বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে:

ভার্টিগো: ভার্টিগো হল এমন একটি অনুভূতি, যাতে আপনার মনে হবে চারপাশের জিনিসগুলি ঘুরছে । এটি অন্তঃকর্ণের সমস্যার কারণে হতে পারে, যা আপনার শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।মাথা ঘোরা কমানোর উপায় আমাদের জানতে হবে।

মাইগ্রেন: মাইগ্রেন মাথাব্যথার সাথে মাথা ঘোরা হতে পারে।

অ্যানিমিয়ার: অ্যানিমিয়ায় রক্ত ​​​​শরীরের চারপাশে সঠিকভাবে প্রবাহিত হয় না, যার ফলে মাথা ঘোরা হতে পারে।

নিম্ন রক্তচাপ: নিম্ন রক্তচাপের কারণে মাথা ঘোরা হতে পারে।

অতিরিক্ত পরিশ্রম: অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে মাথা ঘোরা হতে পারে।

অ্যালকোহল বা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: অ্যালকোহল বা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে মাথা ঘোরা হতে পারে।

ঘাড়ের ব্যথা বা আঘাত: ঘাড়ের ব্যথা বা আঘাতের কারণে মাথা ঘোরা হতে পারে।

মস্তিষ্কের রোগ: মস্তিষ্কের রোগের কারণে মাথা ঘোরা হতে পারে, যেমন স্ট্রোক, মস্তিষ্কের টিউমার বা ভেস্টিবুলার নিউরাইটিস।
মাথা ঘোরার কারণ নির্ণয়ের জন্য ডাক্তার আপনাকে আপনার লক্ষণ এবং চিকিৎসা ইতিহাস সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবেন। তারা আপনার শরীরের পরীক্ষাও করতে পারেন।মাথা ঘোরা কমানোর উপায় আমাদের জানতে হবে।

আরও জানুন : পিঠের মাঝখানে ব্যথা কারণ, লক্ষণ, চিকিৎসা ও তার প্রতিকার

মাথা ঘোরা বন্ধ করার জন্য আপনি নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি নিতে পারেন:

  • শুয়ে পড়ুন বা বসে পড়ুন।
  • আপনার মাথাকে স্থির রাখুন।
  • আপনার চোখ বন্ধ করুন এবং মনোযোগ সুহকারে হাত দিন।
  • আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন।
  • আপনার মাথা ঘোরা যদি গুরুতর হয় বা যদি এটি নতুন হয় তবে অবিলম্বে চিকিৎসা সাহায্য নিন।

কিভাবে আমরা ঘরে বসে মাথা ঘোরা কমাতে পারি?

পর্যাপ্ত পানি পান করুন

ডিহাইড্রেশনের কারণে প্রায়ই মাথা ঘোরায়। যদি তাই হয়, পানি পান করুন। প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ থেকে ২০ গ্লাস পানি পান করুন। সামান্য মধু দিয়েও ভেষজ চা পান করতে পারেন। ফলের রসও খেতে পারেন।মাথা ঘোরা কমানোর উপায় আমাদের জানতে হবে।

কিছু খাবার খান

রক্তে শর্করার মাত্রা কম হলে, বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের মাথা ঘোরায়। তাই কিছু স্বাস্থ্যকর খাবার খান। এটি সমস্যা কমাতে সাহায্য করবে। এ ক্ষেত্রে কার্বোহাইড্রেট বেশি থাকে এমন খাবার খেতে পারেন। যেমন: চকলেট, কলা খেতে পারেন। একমুঠো বাদামও খেতে পারেন। যেমন: বাদাম, আখরোট ইত্যাদি।

 আদা

বমি বমি ভাব ও বমি কমাতে আদা উপকারী। এটি মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে, দ্রুত মাথা ঘোরার সমস্যা কমায়। তাই মাথা ঘোরার সমস্যা থাকলে এক টুকরো আদা চিবিয়ে খান। আদা চাও খেতে পারেন।

স্বাস্থ্যকর খাবার খান

স্বাস্থ্যকর খাবার খেলে স্নায়ুতন্ত্র সুস্থ থাকে। এটি রক্তস্বল্পতা, লো ব্লাড প্রেসার ইত্যাদি প্রতিরোধ করে।এক্ষেত্রে খাবারে আয়রন, ভিটামিন এ, ফলিক এসিড ও ফাইবার যুক্ত খাবার রাখুন।মাথা ঘোরা কমানোর উপায় আমাদের জানতে হবে।

ঘুম

অনেক সময় পর্যাপ্ত ঘুম না হলে মাথা ঘোরা হয়। তাই পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন। প্রতিদিন অন্তত সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমান।

কেন গর্ভাবস্থায় মাথা ঘোরায় ?

গর্ভাবস্থায় মাথা ঘোরার বেশ কয়েকটি কারণে হতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে:

হরমোনের পরিবর্তন: গর্ভাবস্থায়, শরীরে কিছু হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যেমন প্রজেস্টেরন। প্রজেস্টেরন রক্তনালীগুলিকে শিথিল করতে পারে, যার ফলে রক্তচাপ হ্রাস পায় এবং মাথা ঘোরা হতে পারে।

রক্তচাপ হ্রাস: হঠাৎ করে দাঁড়ালে বা বসে গেলে মাথা ঘোরা হতে পারে। গর্ভাবস্থায়, রক্তচাপ হ্রাস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, কারণ গর্ভাশয় বৃদ্ধির ফলে রক্ত ​​​​প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।

গর্ভাশয়ের বৃদ্ধি: গর্ভাশয় বৃদ্ধির সাথে সাথে, এটি মেরুদণ্ডের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এটি মাথা ঘোরা এবং ভারসাম্যহীনতা হতে পারে।

অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা: গর্ভাবস্থায় অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যাও মাথা ঘোরা হতে পারে, যেমন অ্যানিমিয়া, গর্ভকালীন ডায়াবেটিস বা গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপ।মাথা ঘোরা কমানোর উপায় আমাদের জানতে হবে।

আরও জানুন : কোমরের দুই পাশে ব্যথার কারণ, চিকিৎসা ও তার প্রতিকার

কিভাবে আমরা গর্ভাবস্থায় মাথা ঘোরা কমাতে পারি?

মাথা ঘোরা কমানোর উপায় আমাদের জানতে হবে। এখানে কিছু টিপস রয়েছে যা গর্ভাবস্থায় মাথা ঘোরা কমাতে সাহায্য করতে পারে:

  • আপনার মাথার নীচে একটি বালিশ দিয়ে শুয়ে পড়ুন। এটি আপনার মাথাকে স্থির রাখতে সাহায্য করবে।
  • আপনার চোখ বন্ধ করুন এবং মনোযোগ সহকারে শ্বাস নিন। গভীর শ্বাস নিন এবং আপনার শ্বাস বের করে দিন। এটি আপনাকে শান্ত হতে এবং মাথা ঘোরা কমাতে সাহায্য করবে।
  • আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন। তারা আপনাকে কিছু ওষুধ বা অন্যান্য চিকিৎসার পরামর্শ দিতে পারেন যা মাথা ঘোরা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
  • গর্ভকালীন মাথা ঘোরা সাধারণত ক্ষতিকারক নয়। তবে, যদি আপনার মাথা ঘোরা গুরুতর হয় বা যদি এটি আপনার দৈনন্দিন জীবনে হস্তক্ষেপ করে তবে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন।

ওষুধের পার্শ্বপক্রিয়ায় যদি মাথা ঘোরে, মাথা ঘোরা কমানোর উপায়?

ওষুধ থেকে মাথা ঘোরা কমাতে আপনি নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি নিতে পারেন:

  • আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন। তারা আপনাকে বলতে পারবেন যে আপনার মাথা ঘোরা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কিনা এবং এটি কমাতে কী করা যেতে পারে।
  • ওষুধের ডোজ কমিয়ে দিন। যদি সম্ভব হয় তবে আপনার ডাক্তার আপনাকে ওষুধের ডোজ কমাতে পরামর্শ দিতে পারেন।
  • অন্য ওষুধ চেষ্টা করুন। যদি একটি ওষুধে আপনার মাথা ঘোরায় , তাহলে আপনার ডাক্তার আপনাকে অন্য ওষুধ চেষ্টা করতে পরামর্শ দিতে পারেন।
  • ওষুধের সাথে খাবার খাওয়া। কিছু ওষুধ খাবারের সাথে খাওয়ালে মাথা ঘোরা কম হতে পারে।
  • অন্যান্য ওষুধের সাথে ওষুধের মিথস্ক্রিয়া এড়িয়ে চলুন। কিছু ওষুধের সাথে অন্য ওষুধের মিথস্ক্রিয়া মাথা ঘোরা হতে পারে।

ওষুধ থেকে মাথা ঘোরা কমাতে কিছু নির্দিষ্ট ওষুধও রয়েছে। এই ওষুধগুলি সাধারণত অ্যান্টিহিস্টামিন বা বেনজোডায়াজেপিন। অ্যান্টিহিস্টামিনগুলি বমি বমি ভাব এবং বমি কমাতে সাহায্য করে। বেনজোডায়াজেপিনগুলি উদ্বেগ এবং নার্ভাসনেস কমাতে সাহায্য করে।

আপনার যদি ওষুধ থেকে মাথা ঘোরা হয় তবে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলা গুরুত্বপূর্ণ। তারা আপনাকে মাথা ঘোরা কমাতে সাহায্য করার জন্য সেরা পদক্ষেপগুলি নির্ধারণ করতে সক্ষম হবেন।

কিভাবে আমরা উচ্চ রক্তচাপ থেকে সৃষ্ট মাথা ঘোরা কমাতে পারি?

আপনার যদি উচ্চ রক্তচাপ থাকে তবে আপনাকে  নিজের যত্ন নিতে হবে। কারণ এই রোগ স্ট্রোক এবং হার্ট অ্যাটাকের মতো মারাত্মক রোগের দিকে নিয়ে যায়। আর এই গরমে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তিদের যত্ন নিতে হবে। কারণ প্রখর রোদে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে। গরমে রক্তনালীগুলো স্ফীত হয়ে যায়। এতে রক্তচাপ বেড়ে যায়। সাবধান না হলে মৃত্যু ঘটতে পারে।

উচ্চ রক্তচাপ থাকলে রোদে বের না হওয়াই ভালো। কারণ আপনি যদি রোদে বের হন এবং আপনার রক্তচাপ হঠাৎ বেড়ে যায়, তাহলে আপনি মাথা ঘোরা, অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন। কেউ কেউ মাথাব্যথায়ও ভুগতে পারেন। হঠাৎ করে রক্তচাপ বেড়ে গেলেও অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

মাথা ঘোরা কমানোর জন্য ব্যায়াম?

মাথা ঘোরা কমানোর উপায় আমাদের জানতে হবে। মাথা ঘোরা কমানোর জন্য ব্যায়াম একটি কার্যকর উপায় হতে পারে। ব্যায়াম আপনার শরীরের ভারসাম্য এবং সমন্বয় উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে, যা মাথা ঘোরা কমাতে সাহায্য করতে পারে।

মাথা ঘোরা কমানোর জন্য কিছু নির্দিষ্ট ব্যায়াম হল:

ভারসাম্য ব্যায়াম

ভারসাম্য ব্যায়াম আপনার শরীরের ভারসাম্য এবং সমন্বয় উন্নত করতে সাহায্য করে। কিছু সাধারণ ভারসাম্য ব্যায়াম হল:

  • এক পায়ে দাঁড়ানো
  • চোখ বন্ধ করে এক পায়ে দাঁড়ানো
  • একটি চেয়ারে বসে, চোখ বন্ধ করে পা উঁচু করা

সমন্বয় ব্যায়াম

সমন্বয় ব্যায়াম আপনার শরীরের বিভিন্ন অংশকে একসাথে কাজ করতে সাহায্য করে। কিছু সাধারণ সমন্বয় ব্যায়াম হল:

  • বল ছুড়ে মারা এবং ধরা
  • একটি দড়ি বা লাঠি দিয়ে হাঁটা
  • একটি বল দিয়ে ওয়াল কাটিং

ধীর গতিতে ব্যায়াম

ধীর গতিতে ব্যায়াম আপনার শরীরকে আস্তে আস্তে উত্তেজিত করতে সাহায্য করে, যা মাথা ঘোরা কমাতে সাহায্য করতে পারে। কিছু সাধারণ ধীর গতিতে ব্যায়াম হল:

  • হাঁটা
  • জগিং
  • সাঁতার কাটা

আপনি যদি মাথা ঘোরা অনুভব করেন তবে ব্যায়াম করা শুরু করার আগে ফিজিওথেরাপিস্ট আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন। তারা আপনাকে নিরাপদ এবং সঠিক ব্যায়াম কর্মসূচি তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে।

মাথা ঘোরা কমানোর জন্য ব্যায়াম করার সময়, নিম্নলিখিত টিপসগুলি অনুসরণ করুন:

  • আপনার সীমা অতিক্রম করবেন নথি
  • আপনি যদি মাথা ঘোরা অনুভব করেন তবে বিশ্রাম নিন।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করার মাধ্যমে, আপনি মাথা ঘোরা কমাতে এবং আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সাহায্য করতে পারেন।

আমি যখন হঠাৎ উঠে দাঁড়াই তখন মাথা ঘোরায়, এটা প্রতিরোধ করতে আমি কী করতে পারি?

হঠাৎ দাঁড়ানোর সময় মাথা ঘোরা রোধ করতে, বসা বা শুয়ে থাকা অবস্থান থেকে ধীরে ধীরে ও স্থিরভাবে উঠুন। এটি আপনার শরীরের ভঙ্গির পরিবর্তনের সাথে সামঞ্জস্য করার জন্য সময় দেয়।

ডিহাইড্রেশন কি মাথা ঘোরাতে অবদান রাখতে পারে এবং আমি কীভাবে সঠিকভাবে হাইড্রেটেড থাকতে পারি?

ডিহাইড্রেশন হলে মাথা ঘোরা হতে পারে। হাইড্রেটেড থাকার জন্য, সারা দিন পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করুন, বিশেষ করে গরম আবহাওয়ায় বা শারীরিক কার্যকলাপের সময়।

ব্যায়াম কি মাথা ঘোরা কমাতে সাহায্য করে এবং কোন ধরনের ব্যায়াম উপকারী?

হ্যাঁ, নিয়মিত শারীরিক ক্রিয়াকলাপ রক্ত সঞ্চালন এবং ভারসাম্যকে উন্নত করতে পারে, যা মাথা ঘোরার ঝুঁকি হ্রাস করে। হাঁটা, সাঁতার এর মত ক্রিয়াকলাপগুলি চমৎকার কার্যকরী ।

লিখেছেন-

ডাঃ সাইফুল ইসলাম, পিটি
বিপিটি ( ঢাবি ) , এমপিটি ( অর্থোপেডিকস ) – এন.আই.পি.এস , ইন্ডিয়া
পিজি.সি. ইন আকুপাংচার , ইন্ডিয়া
স্পেশাল ট্রেইন্ড ইন ওজন থেরাপি , ইউ.এস.এ এবং ওজোন ফোরাম , ইন্ডিয়া ।
ফিজিওথেরাপি কনসালট্যান্ট , ভিশন ফিজিওথেরাপি সেন্টার ।
পরামর্শ পেতে – 01760-636324 , 01932-797229 (সকাল ৯.০০ থেকে রাত ৯.০০ টা) 
ফেসবুকঃ ভিশন ফিজিওথেরাপি সেন্টার 
এপয়েন্টম্যান্ট নিতে ক্লিক করুনঃ
https://visionphysiotherapy.com/appoi..

visionphysiotherapy
visionphysiotherapy
Articles: 147