পেট ব্যথা একটি অত্যন্ত সাধারণ শারীরিক অসুস্থতা, যা প্রায় সবার জীবনেই কোনো না কোনো সময় দেখা দেয়। এই ব্যথার কারণ অনেকগুলো হতে পারে, শুরু করে সামান্য খাবারের অপচয় থেকে শেষ করে গুরুতর কোনো রোগ। অতীতে, পেট ব্যথাকে প্রায়শই শুধুমাত্র শারীরিক কারণের সাথে যুক্ত করা হতো। কিন্তু আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে সাথে এটি স্পষ্ট হয়েছে যে, মানসিক স্বাস্থ্যও পেট ব্যথার একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হতে পারে।
হঠাৎ হঠাৎ পেট ব্যথার কারণ
মানসিক চাপ
মানসিক চাপ শুধু মনকেই প্রভাবিত করে না, শরীরের অন্যান্য অংশকেও প্রভাবিত করে। মানসিক চাপের কারণে শরীরে ক্ষতিকর হরমোন নিঃসৃত হয়, যা পেটের পেশীকে সংকুচিত করে এবং ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়াও, মানসিক চাপের কারণে অনেকেই অতিরিক্ত খাওয়া বা খাবার কম খাওয়া শুরু করেন, যা পেটের সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে।
অস্টিওআর্থারাইটিস কেন হয় তা জানতে আমাদের এই পোস্টটি পড়ে নিন।
শারীরিক কারণ
পেট ব্যথার শারীরিক কারণগুলি অনেক বেশি। এর মধ্যে রয়েছে:
খাদ্যের কারণে পেট ব্যথা
- মশলাদার খাবার: মশলাদার খাবার পাকস্থলীর এসিড নিঃসরণ বাড়িয়ে দিতে পারে, যার ফলে পেটে জ্বালাপোড়া এবং ব্যথা হয়।
- অ্যাসিডিক খাবার: লেমন, কমলালেবু, টম্যাটো ইত্যাদি অ্যাসিডিক খাবার পেপটিক আলসার বা গ্যাস্ট্রাইটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
- ল্যাক্টোজ অসহিষ্ণুতা: অনেক মানুষের শরীরে ল্যাক্টোজ (দুধে উপস্থিত শর্করা) ভাঙার জন্য প্রয়োজনীয় এনজাইমের অভাব থাকে। ফলে দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার খেলে তাদের পেট ফুলে ওঠে এবং ব্যথা হয়।
- ফুড পয়জনিং: দূষিত খাবার খেলে ফুড পয়জনিং হতে পারে, যার লক্ষণ হল পেট ব্যথা, বমি, ডায়রিয়া ইত্যাদি।
আমাদের ফিজিওথেরাপি সেন্টারে সেরা ফিজিওথেরাপি সেবা পেতে আজই এপয়েন্টমেন্ট নিন অথবা +8801932-797229 এই নম্বরে কল করুন।
সংক্রমণের কারণে পেট ব্যথা
- ভাইরাস: নোরোভাইরাস, রোটাভাইরাস ইত্যাদি ভাইরাস পেটে সংক্রমণ ঘটিয়ে ডায়রিয়া এবং পেট ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে।
- ব্যাকটেরিয়া: সালমোনেলা, ই. কোলি ইত্যাদি ব্যাকটেরিয়া দূষিত খাবারের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে পেটে সংক্রমণ ঘটাবে।
- পরজীবী: কিছু পরজীবী, যেমন জিয়ার্ডিয়া, অন্ত্রে সংক্রমণ ঘটিয়ে পেট ব্যথা, ডায়রিয়া এবং ওজন কমে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণ সৃষ্টি করতে পারে।
অন্যান্য রোগের কারণে পেট ব্যথা
- পেপটিক আলসার: পাকস্থলী বা অন্ত্রের আস্তরণে ঘা হওয়াকে পেপটিক আলসার বলে। এটি সাধারণত ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ বা অ্যাসপিরিন ও অন্যান্য অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ওষুধ সেবনের কারণে হয়।
- ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম (আইবিএস): আইবিএস একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ, যার লক্ষণ হল পেট ফোলা, কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া এবং পেট ব্যথা।
- অ্যাপেন্ডিসাইটিস: অ্যাপেন্ডিক্স হল অন্ত্রের একটি ছোট অংশ, যা প্রদাহিত হলে অ্যাপেন্ডিসাইটিস হয়। এর লক্ষণ হল তীব্র পেট ব্যথা, জ্বর, বমি ইত্যাদি।
- গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল রোগ: ক্রোন’স ডিজিজ, আলসারেটিভ কোলাইটিস ইত্যাদি গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল রোগ অন্ত্রে প্রদাহ সৃষ্টি করে এবং পেট ব্যথা, ডায়রিয়া, ওজন কমে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়।
অন্যান্য বিশেষ কারণে পেট ব্যথা
- মাসিকের সময়: মাসিকের সময় হরমোনের পরিবর্তনের কারণে অনেক মহিলার পেটে ক্র্যাম্প হয়।
- গর্ভাবস্থা: গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তন, গর্ভাশয়ের বৃদ্ধি এবং অন্যান্য শারীরিক পরিবর্তনের কারণে পেটে ব্যথা হতে পারে।
- কিডনি পাথর: কিডনিতে পাথর হলে তীব্র পেট ব্যথা, বমি, জ্বর ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
- পিত্তথলির পাথর: পিত্তথলিতে পাথর হলে ডানদিকের উপরের পেটে তীব্র ব্যথা, বমি, জ্বর ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
গ্যাসের ব্যথা বুকের কোন পাশে হয় জানতে এই পোস্টটি পড়ুন।
পেট ব্যথা কেন হয়?
পেট ব্যথা একটি খুব সাধারণ সমস্যা, যার অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। উপরের তালিকাটি পেট ব্যথার কিছু সাধারণ কারণ উল্লেখ করেছে। আসুন এই বিষয়গুলিকে আরও বিস্তারিতভাবে আলোচনা করি:
- হজমের সমস্যা: খাবার হজমে সমস্যা হলে গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটির কারণে পেটে ব্যথা হতে পারে। মশলাদার খাবার, অ্যাসিডিক খাবার, অতিরিক্ত খাওয়া, দ্রুত খাওয়া ইত্যাদি হজমের সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে।
- গ্যাস্ট্রিক বা আলসার: পাকস্থলীতে অতিরিক্ত এসিড নিঃসরণ হলে গ্যাস্ট্রিক হতে পারে। আবার, পাকস্থলীর আস্তরণে ঘা হলে তাকে আলসার বলে। উভয় ক্ষেত্রেই পেটে জ্বালাপোড়া, ব্যথা এবং অস্বস্তি অনুভূত হয়।
- ইনফেকশন: ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা পরজীবী সংক্রমণের কারণে অন্ত্র বা পাকস্থলীতে প্রদাহ হতে পারে, যার ফলে ডায়রিয়া, বমি, পেট ব্যথা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়।
- অ্যাপেন্ডিসাইটিস: অ্যাপেন্ডিক্স হল অন্ত্রের একটি ছোট অংশ, যা প্রদাহিত হলে অ্যাপেন্ডিসাইটিস হয়। এর লক্ষণ হল পেটের ডান পাশে তীব্র ব্যথা, জ্বর, বমি ইত্যাদি।
- পেট ফাঁপা বা গ্যাস: খাবার হজমের সময় গ্যাস তৈরি হয়। যদি এই গ্যাস বাহির না হতে পারে তবে পেট ফুলে ওঠে এবং ব্যথা হয়।
- মেয়েদের মাসিক সংক্রান্ত সমস্যা: মাসিকের সময় হরমোনের পরিবর্তনের কারণে অনেক মহিলার পেটে ক্র্যাম্প হয়। এছাড়া ডিম্বাণু নিক্ষেপের সময়ও পেটে ব্যথা হতে পারে।
- কোষ্ঠকাঠিন্য: মলত্যাগে অসুবিধা হলে কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। এর ফলে পেটে চাপ পড়ে এবং ব্যথা হয়।
- কিডনির সমস্যা: কিডনিতে পাথর হলে বা সংক্রমণ হলে পেটের উপরের দিকে এবং পিঠে ব্যথা হতে পারে।
ভিশন ফিজিওথেরাপি সেন্টারে উন্নতমানের সেবা পেতে আজই এপয়েন্টমেন্ট নিন অথবা +8801932-797229 এই নম্বরে কল করুন।
হঠাৎ হঠাৎ পেট ব্যথার কারণ
হঠাৎ করে পেটে ব্যথা অনুভব করা একদম স্বাভাবিক একটি ব্যাপার। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নানা কারণে এমনটা হতে পারে। কিন্তু এই ব্যথার কারণ জানা খুবই জরুরি। কারণ, কখনো কখনো এই ব্যথা কোনো গুরুতর সমস্যার ইঙ্গিতও বহন করতে পারে।
আসুন, পেট ব্যথার কিছু সাধারণ কারণ জেনে নিই:
- অপরিকল্পিত খাবার ও অস্বাস্থ্যকর খাবার: খুব তেল-মসলাযুক্ত, ঝাল বা অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার খাওয়া, অতিরিক্ত পরিমাণে খাবার খাওয়া, অপরিপক্ক ফল খাওয়া ইত্যাদি কারণে হঠাৎ পেটে ব্যথা হতে পারে।
- খাবারে বিষক্রিয়া: দূষিত খাবার খাওয়ার ফলে খাদ্য বিষক্রিয়া হতে পারে। এতে পেটে তীব্র ব্যথা, বমি, ডায়রিয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
- গ্যাস জমে যাওয়া: অনেক সময়ই আমরা খাবার খাওয়ার পরে বা কোনো কোনো খাবার খেলে পেটে গ্যাস জমে যায়। এই গ্যাসের চাপে পেটে ব্যথা হতে পারে।
- ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: কিছু কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে পেটে ব্যথা হতে পারে। আবার, কোনো কোনো ওষুধের প্রতি অ্যালার্জিও পেটে ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে।
- মানসিক চাপ: অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা উদ্বেগও পেটে ব্যথা বাড়িয়ে দিতে পারে।
- সংক্রমণ: ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা পরজীবী সংক্রমণের ফলেও পেটে ব্যথা হতে পারে।
- অন্যান্য কারণ: এর বাইরেও, অ্যাপেন্ডিসাইটিস, গ্যাস্ট্রিক, আলসার, গলব্লাডারের সমস্যা, কিডনি স্টোন ইত্যাদি কারণেও হঠাৎ পেটে ব্যথা হতে পারে।
টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত জানেন? বিস্তারিত জেনে নিন।
হঠাৎ পেট ব্যথা হলে করণীয়
হঠাৎ পেট ব্যথা একটি অস্বস্তিকর অভিজ্ঞতা হতে পারে এবং এর কারণ বিভিন্ন হতে পারে। তবে প্রাথমিকভাবে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করলে ব্যথা থেকে আরাম পাওয়া সম্ভব। নিচে বিস্তারিত করণীয় পদক্ষেপগুলো উল্লেখ করা হলো:
১. আরাম করুন
পেট ব্যথা হলে প্রথমেই আরাম করার চেষ্টা করুন। বিছানায় শুয়ে পড়ুন এবং পেটের পেশিগুলো শিথিল রাখুন। আপনি যদি পিঠে শুয়ে থাকেন তবে হাঁটু একটু বাঁকিয়ে রাখুন। এটি পেটের পেশিগুলোর উপর চাপ কমিয়ে ব্যথা উপশমে সহায়তা করবে।
২. পানি পান করুন
হালকা গরম পানি পান করলে পেটে জমে থাকা গ্যাস বা অস্বস্তি দূর হয়। এটি হজম প্রক্রিয়া সহজ করে এবং পেটের পেশিগুলোকে শিথিল হতে সাহায্য করে। তবে খুব ঠান্ডা বা গরম পানি নয়, কুসুম গরম পানি পান করা ভালো।
৩. হজম সহায়ক কিছু গ্রহণ করুন
পেট ব্যথা প্রায়ই হজম সংক্রান্ত সমস্যার কারণে হয়ে থাকে। এই ক্ষেত্রে কিছু ঘরোয়া উপাদান খুব কার্যকর হতে পারে:
- আদা চা: আদা হজমে সহায়তা করে এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান হিসেবে কাজ করে।
- জিরা পানি: এক গ্লাস পানিতে জিরা সিদ্ধ করে ঠান্ডা করে পান করুন। এটি পেটের গ্যাস দূর করতে সাহায্য করে।
- পুদিনা চা: পুদিনা পাতা ফুটিয়ে সেই পানি পান করুন। এটি পেট ব্যথা কমায়।
৪. ডাক্তারের পরামর্শ নিন
যদি ব্যথা তীব্র হয়, অনেকক্ষণ ধরে থাকে বা বারবার ঘটে, তবে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া অত্যন্ত জরুরি। বিশেষত যদি ব্যথার সাথে বমি, ডায়রিয়া, জ্বর, বা মলত্যাগে রক্তের মতো উপসর্গ থাকে, তবে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
৫. হালকা খাবার খান
পেট ব্যথা হলে ভারী বা মসলাযুক্ত খাবার না খেয়ে সহজপাচ্য খাবার খান।
- ভাত, স্যুপ, খিচুড়ি বা ওটমিলের মতো খাবার গ্রহণ করুন।
- তেল-মশলা এড়িয়ে চলুন এবং পরিমাণে কম খাবার গ্রহণ করুন।
এটি হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করবে এবং পেটের উপর চাপ কমাবে।
অতিরিক্ত টিপস:
- পেটে গ্যাস জমে গেলে হালকা গরম পানিতে এক চিমটি লবণ মিশিয়ে পান করা যেতে পারে।
- গরম পানির বোতল বা হট ব্যাগ দিয়ে পেটে সেঁক দিলে ব্যথা কমে যায়।
- ব্যথার সময় একদম শুয়ে না থেকে বসে থাকলে আরাম পাওয়া যায়।
যদি উপরের কোনো পদ্ধতিতে আরাম না পাওয়া যায় বা সমস্যা গুরুতর হয়, তবে দ্রুত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চিকিৎসকের সঠিক নির্দেশনা অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করুন।
ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা জানতে এই পোস্টটি পড়ুন।
হঠাৎ পেট ব্যথা কমানোর উপায়
পেট ব্যথা অস্বস্তিকর একটি শারীরিক সমস্যা, তবে কিছু সহজ এবং কার্যকর উপায় অনুসরণ করে এটি দ্রুত লাঘব করা সম্ভব। নিচে বিস্তারিতভাবে পেট ব্যথা কমানোর ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো তুলে ধরা হলো:
১. গরম পানির বোতল ব্যবহার করুন
পেটে ব্যথা হলে গরম পানির বোতল ব্যবহার করা একটি সাধারণ এবং কার্যকর উপায়।
- একটি গরম পানির বোতল বা হট ব্যাগ নিন।
- ব্যথার স্থানে এটি প্রায় ১০-১৫ মিনিটের জন্য রাখুন।
- এটি পেটের পেশিগুলো শিথিল করতে সাহায্য করে এবং গ্যাস বা গ্যাস্ট্রিকজনিত ব্যথা দ্রুত কমায়।
সতর্কতা: গরম সেঁক দেওয়ার সময় অতিরিক্ত গরম এড়িয়ে চলুন, কারণ এটি ত্বকে জ্বালা সৃষ্টি করতে পারে।
২. আদা চা পান করুন
আদা একটি প্রাকৃতিক হজম সহায়ক এবং এতে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান রয়েছে, যা পেটের গ্যাস ও ব্যথা কমাতে সহায়তা করে।
- ১ চা চামচ কুচি করা আদা ১ কাপ পানিতে সিদ্ধ করুন।
- এতে এক চিমটি মধু মিশিয়ে পান করুন।
- এটি পেটের ব্যথা কমিয়ে দ্রুত আরাম দেয়।
৩. জিরা পানি পান করুন
জিরা পেটের গ্যাস দূর করতে এবং হজমে সাহায্য করতে অত্যন্ত কার্যকর।
- ১ গ্লাস পানিতে ১ চা চামচ জিরা যোগ করুন এবং এটি ৫-৭ মিনিট ধরে সিদ্ধ করুন।
- পানি ঠান্ডা হলে সেটি পান করুন।
- জিরায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য পেটের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
৪. লেবু পানি পান করুন
লেবুর মধ্যে উপস্থিত সাইট্রিক অ্যাসিড হজমের প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং পেটের ব্যথা লাঘব করে।
- ১ গ্লাস হালকা গরম পানিতে ১ চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে নিন।
- এর সাথে এক চিমটি লবণ যোগ করুন।
- এটি পান করলে পেটের গ্যাস কমে এবং অস্বস্তি দূর হয়।
৫. যোগব্যায়াম বা শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুশীলন করুন
পেটের ব্যথা কমাতে হালকা যোগব্যায়াম এবং ডিপ ব্রেথিং (গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস) অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে।
- একটি সমতল স্থানে বসে ধীরে ধীরে গভীর শ্বাস নিন এবং ছাড়ুন।
- কিছু সহজ যোগব্যায়াম (যেমন, পবনমুক্তাসন বা চাইল্ড পোজ) করতে পারেন, যা পেটে জমে থাকা গ্যাস বের করতে সাহায্য করে।
- শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ পেটের পেশি শিথিল করে এবং ব্যথা কমায়।
অতিরিক্ত টিপস
- পুদিনা পাতা চিবিয়ে খান: পুদিনা পাতা চিবালে পেটের অস্বস্তি কমে এবং হজম ভালো হয়।
- তেল-মশলা এড়িয়ে চলুন: ব্যথার সময় তেল-মশলাযুক্ত খাবার না খেয়ে সহজপাচ্য খাবার খান।
- ক্যামোমাইল চা পান করুন: এটি হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে এবং পেটের পেশি শিথিল করে।
পেট ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
ঘরোয়া কিছু সহজ উপায়ে পেট ব্যথা কমানো যায়:
- আদা ও মধু: এক চা চামচ আদার রসের সাথে মধু মিশিয়ে খান।
- পুদিনা পাতা: পুদিনা পাতা চিবিয়ে খেলে বা এর চা বানিয়ে খেলে আরাম পাওয়া যায়।
- হিং পানীয়: পানিতে সামান্য হিং মিশিয়ে পান করুন।
- দারুচিনি চা: দারুচিনি সিদ্ধ করে সেই পানি পান করুন।
- গরম লবণ পানি: পেটে মৃদু ব্যথা হলে লবণ গরম পানিতে মিশিয়ে পান করুন।
হঠাৎ হঠাৎ পেট ব্যথা বা তলপেটে ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা হলেও এর পেছনে নানা কারণ থাকতে পারে, যেমন হজমজনিত সমস্যা, গ্যাস্ট্রিক, গ্যাস, কোলাইটিস, প্রস্রাবের সংক্রমণ, বা মহিলাদের ক্ষেত্রে ডিম্বাশয়ের সমস্যাজনিত ব্যথা। ব্যথার তীব্রতা ও স্থায়িত্ব দেখে এটি গুরুতর কিনা তা বোঝা যায়।
তবে ঘরোয়া প্রতিকার যেমন হালকা খাবার, আদা বা জিরা পানি পান করা, এবং পেটে গরম সেঁক প্রয়োগ করার মাধ্যমে তাৎক্ষণিক আরাম পাওয়া সম্ভব। তবে যদি ব্যথা তীব্র হয়, দীর্ঘস্থায়ী হয়, বা সাথে অন্য উপসর্গ (যেমন জ্বর, বমি, বা রক্তপাত) দেখা দেয়, তাহলে এটি অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
লিখেছেন-
ডাঃ সাইফুল ইসলাম, পিটি
বিপিটি ( ঢাবি ), এমপিটি ( অর্থোপেডিকস ) – এন.আই.পি.এস, ইন্ডিয়া
পিজি.সি. ইন আকুপাংচার, ইন্ডিয়া
স্পেশাল ট্রেইন্ড ইন ওজন থেরাপি, ইউ.এস.এ এবং ওজোন ফোরাম, ইন্ডিয়া।
ফিজিওথেরাপি কনসালট্যান্ট, ভিশন ফিজিওথেরাপি সেন্টার।
পরামর্শ পেতে – 01760-636324 , 01932-797229 (সকাল ৯.০০ থেকে রাত ৯.০০ টা) এই নম্বরে কল করুন এবং এপয়েন্টমেন্ট নিয়ে নিন।
আমাদের ফেইসবুক পেইজঃ ভিশন ফিজিওথেরাপি সেন্টার
Consultant Physiotherapist
BPT (DU), MPT (Ortho)
PGC in Acupuncture (India)
Specially trained in Ozone therapy