সংক্ষেপ
গর্ভাবস্থায় কিছু খাবার এড়িয়ে চলা উচিত, বিশেষত কাঁচা অথবা ভালোভাবে রান্না করা হয়নি এমন খাবার, কারণ এগুলোতে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। কাঁচা অঙ্কুরিত বীজ (যেমন মূলা, শিম, আলফালফার বীজ), খাদ্যশস্য ও শিম এবং রেডি-টু-ইট সালাদ এই তালিকার অন্তর্ভুক্ত।
এই খাবারগুলোতে লিসটেরিয়া, সালমোনিলা ও ই. কোলাই নামক ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া contaminates হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। গর্ভবতী মহিলাদের জন্য এই ব্যাকটেরিয়াগুলো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে, যার মধ্যে গর্ভপাত, অপরিণত প্রসব এবং নবজাতকের গুরুতর অসুস্থতা অন্যতম। তাই, গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর সুরক্ষার জন্য এই ধরনের খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকা বুদ্ধিমানের কাজ। গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না এবং খেলে কি হতে পারে তা নিয়ে আজ আলোচনা করবো।

প্রাথমিক ভূমিকা
গর্ভাবস্থায় মায়ের সঠিক পুষ্টির জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা অপরিহার্য। তবে কিছু সবজি আছে যা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য নিরাপদ নাও হতে পারে এবং স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। তাই, গর্ভবতী অবস্থায় কোন সবজিগুলো পরিহার করা উচিত সে সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখা মায়ের ও শিশুর উভয়ের সুস্থতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
কাঁচা অথবা আধা-সিদ্ধ সবজি গর্ভাবস্থায় এড়িয়ে যাওয়া উচিত। এর মধ্যে কাঁচা অঙ্কুরিত বীজ যেমন মূলা, শিম এবং আলফালফার বীজ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও, রেডি-টু-ইট সালাদ যা আগে থেকে তৈরি করা হয়েছে এবং সঠিকভাবে জীবাণুমুক্ত করা হয়নি, তাতেও ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। এই ধরনের সবজিতে লিসটেরিয়া, সালমোনিলা এবং ই. কোলাই-এর মতো জীবাণু থাকার সম্ভাবনা থাকে, যা গর্ভবতী মায়ের শরীরে সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
কিছু সবজি রান্নার পরেও গর্ভবতী মহিলাদের জন্য উপযুক্ত নাও হতে পারে। যদিও এর তালিকা খুব দীর্ঘ নয়, তবুও কিছু সবজি যেমন অতিরিক্ত পরিমাণে বেগুন অথবা পেঁপে (কাঁচা বা আধা পাকা) খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কারণ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে এগুলোর কিছু উপাদান গর্ভাবস্থায় জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। তবে, ভালোভাবে রান্না করা সবজি সাধারণত গর্ভবতী মহিলাদের জন্য নিরাপদ এবং পুষ্টিকর। তাই, সবজি খাওয়ার আগে তা ভালোভাবে ধুয়ে এবং সঠিকভাবে রান্না করে গ্রহণ করা উচিত।
গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না জানতে এই পোস্টটি পড়ে নিন।

গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না? যা খেলে হতে পারে বিপদ
গর্ভাবস্থায় কাঁচা স্প্রাউট (যেমন মুগ ডাল, শিম), কাঁচা মুলা ও না ধোয়া সবজি পরিহার করুন, কারণ এগুলোতে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। প্রি-প্যাকড সালাদ ও সালাদ বারের খাবারও এড়িয়ে চলুন। বেগুন ও অতিরিক্ত রসুন কারো কারো জন্য সমস্যা করতে পারে। যেকোনো সবজি ভালোভাবে ধুয়ে ও রান্না করে খান এবং প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
গর্ভাবস্থায় কিছু সবজি এড়িয়ে চলা উচিত কারণ এগুলোতে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বা উপাদান থাকতে পারে যা মা ও শিশুর জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে। কাঁচা অঙ্কুরিত বীজ যেমন মূলা, শিম ও আলফালফার বীজ এবং আগে থেকে তৈরি করা রেডি-টু-ইট সালাদ পরিহার করা উচিত, কারণ এগুলোতে লিসটেরিয়া, সালমোনিলা ও ই. কোলাই-এর মতো জীবাণু থাকতে পারে। এছাড়াও, কাঁচা বা আধা পাকা পেঁপে এবং অতিরিক্ত পরিমাণে বেগুন খাওয়ার ক্ষেত্রেও সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত, কারণ কিছু গবেষণায় এদের উপাদানগুলোর সাথে গর্ভাবস্থার জটিলতার সম্পর্ক দেখা গেছে। ভালোভাবে রান্না করা সবজি সাধারণত নিরাপদ হলেও, কাঁচা বা সঠিকভাবে রান্না না করা সবজি গর্ভবতী মহিলাদের জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। আপনাদের জন্য আরও বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলোঃ
কাঁচা বা আধা-পাকা পেঁপে
কাঁচা অথবা আধা-পাকা পেঁপেতে কিছু বিশেষ রাসায়নিক উপাদান থাকে যা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এই উপাদানগুলো জরায়ুর সংকোচন ঘটাতে পারে, যার ফলে গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ে। তাই, গর্ভাবস্থায় পাকা পেঁপে পরিমিত পরিমাণে খাওয়া গেলেও, কাঁচা বা আধা-পাকা পেঁপে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া উচিত।
গর্ভবতী মহিলাদের উচিত নিশ্চিত হওয়া যে তারা যেন ভুল করেও কাঁচা বা আধা-পাকা পেঁপে না খান। পেঁপের তরকারি বা অন্যান্য রান্নার পদ তৈরিতেও কাঁচা পেঁপে ব্যবহার করা উচিত নয়। পাকা পেঁপে ভিটামিন ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ হলেও, গর্ভাবস্থায় সম্ভাব্য ঝুঁকি এড়াতে কাঁচা পেঁপে থেকে দূরে থাকাই শ্রেয়।
সজিনা (ড্রামস্টিক)
সজিনা একটি পুষ্টিকর সবজি হলেও, গর্ভাবস্থায় এটি পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে সজিনার কিছু উপাদান গর্ভের সংকোচন ঘটাতে পারে। যদিও সাধারণভাবে সজিনা খেলে তেমন কোনো বড় ধরনের সমস্যা হয় না, তবুও গর্ভবতী মহিলাদের অতিরিক্ত পরিমাণে সজিনা খাওয়া উচিত নয়।
বিশেষত গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে সজিনা খাওয়ার ক্ষেত্রে আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। অল্প পরিমাণে এবং ভালোভাবে রান্না করা সজিনা খাওয়া যেতে পারে, তবে এর পরিমাণ সম্পর্কে নিশ্চিত থাকতে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। গর্ভকালীন সময়ে যেকোনো খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রেই পরিমিতি বজায় রাখা জরুরি।

অ্যালোভেরা
অ্যালোভেরা তার ঔষধি গুণাগুণের জন্য পরিচিত হলেও, গর্ভাবস্থায় এটি বা এর জুস খাওয়া ঠিক নয়। অ্যালোভেরাতে কিছু শক্তিশালী যৌগ থাকে যা গর্ভবতী মহিলাদের শরীরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলে জরায়ুতে সংকোচন হতে পারে এবং গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
শুধু খাওয়াই নয়, অনেক সময় ত্বকের যত্নেও অ্যালোভেরা ব্যবহার করা হয়। তবে গর্ভাবস্থায় বাহ্যিক ব্যবহারের ক্ষেত্রেও ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। অভ্যন্তরীণভাবে অ্যালোভেরা বা এর জুস গ্রহণ করা একেবারেই উচিত নয়, কারণ এটি মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
কাঁচা বা অপরিষ্কার শাকসবজি
গর্ভাবস্থায় কাঁচা বা অপরিষ্কার শাকসবজি খাওয়া উচিত নয়। কারণ এগুলোতে বিভিন্ন ধরনের জীবাণু, ব্যাকটেরিয়া বা প্যারাসাইট থাকতে পারে। এসব ক্ষতিকর জীবাণু গর্ভবতী মায়ের শরীরে সংক্রমণ ঘটাতে পারে, যা মা ও শিশুর উভয়ের জন্যই বিপজ্জনক হতে পারে।
শাকসবজি খাওয়ার আগে অবশ্যই সেগুলোকে ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করা উচিত। রান্নার আগে শাকসবজি সঠিকভাবে ধোয়া জীবাণুর ঝুঁকি কমাতে সহায়ক। এছাড়াও, শাকসবজি ভালোভাবে রান্না করে খাওয়া উচিত, যাতে যদি কোনো ক্ষতিকর জীবাণু থেকেও থাকে তা নষ্ট হয়ে যায়। কাঁচা সালাদ বা অন্যান্য কাঁচা সবজি খাওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
মেয়েদের হার্টের সমস্যার লক্ষণ জানতে আমাদের এই পোস্টটি পড়ুন।
রান্না না করা অঙ্কুরিত বীজ বা শিম
অঙ্কুরিত বীজ এবং শিমে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান থাকে, তবে এগুলো যদি সঠিকভাবে রান্না করা না হয় তবে ক্ষতিকর জীবাণুর উৎস হতে পারে। অঙ্কুরিত অবস্থায় বীজ এবং শিম উষ্ণ ও আর্দ্র পরিবেশে থাকে, যা ব্যাকটেরিয়া যেমন ই. কোলাই এবং সালমোনেলার বংশবৃদ্ধির জন্য অনুকূল। গর্ভাবস্থায় এই ধরনের জীবাণুর সংক্রমণ মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।
তাই, গর্ভবতী মহিলাদের উচিত কাঁচা বা আধা-সিদ্ধ অঙ্কুরিত বীজ বা শিম খাওয়া থেকে বিরত থাকা। এগুলো খাওয়ার আগে ভালোভাবে ধুয়ে এবং উচ্চ তাপে রান্না করা জরুরি। রান্নার মাধ্যমে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয়ে যায় এবং খাদ্য নিরাপদ হয়।
কাঁচা মূলা ও সালাদ
কাঁচা মূলা এবং সালাদ স্বাস্থ্যকর খাবার হলেও, গর্ভাবস্থায় এগুলো খাওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা প্রয়োজন। অপরিষ্কার বা কাঁচা অবস্থায় খেলে এগুলোতে মাটিবাহিত জীবাণু, ব্যাকটেরিয়া বা প্যারাসাইট থাকার ঝুঁকি থাকে। এই জীবাণুগুলো গর্ভবতী মায়ের শরীরে সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
কাঁচা মূলা বা সালাদ খাওয়ার আগে খুব ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করতে হবে। সম্ভব হলে খাওয়ার আগে কিছুক্ষণের জন্য লবণ পানিতে ভিজিয়ে রাখা যেতে পারে। রেস্তোরাঁ বা বাইরের তৈরি সালাদ খাওয়ার ক্ষেত্রেও সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত, কারণ সেখানে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাব থাকতে পারে।

বেগুন
বেগুন একটি জনপ্রিয় সবজি হলেও, গর্ভাবস্থায় এটি পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। কিছু মানুষের ক্ষেত্রে বেগুন খেলে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। যদিও সাধারণভাবে বেগুন গর্ভবতী মহিলাদের জন্য ক্ষতিকর নয়, তবে যাদের আগে থেকে বেগুন বা অন্য কোনো খাবারে অ্যালার্জি আছে, তাদের গর্ভাবস্থায় এটি এড়িয়ে যাওয়া ভালো।
এছাড়াও, কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে বেগুনে কিছু উপাদান থাকতে পারে যা অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করলে গর্ভাশয়ের সংকোচন ঘটাতে পারে। তাই, গর্ভবতী মহিলাদের উচিত বেগুন পরিমিত পরিমাণে খাওয়া এবং কোনো অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া দেখলে तुरंत ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া।
অতিরিক্ত সতর্কতা
গর্ভাবস্থায় খাদ্যগ্রহণের ক্ষেত্রে কিছু অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত, যা মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সহায়ক হতে পারে। নতুন বা অজানা সবজি খাওয়া থেকে শুরু করে প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণ পর্যন্ত কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখা জরুরি। নিচে এই বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো:
নতুন বা অজানা শাকসবজি
গর্ভাবস্থায় নতুন কোনো শাক বা সবজি খাদ্যতালিকায় যোগ করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এর কারণ হলো, কিছু সবজির উপাদান গর্ভবতী মহিলাদের শরীরে অপ্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়াও, কোনো কোনো সবজিতে এমন কিছু যৌগ থাকতে পারে যা গর্ভাবস্থার জন্য নিরাপদ নাও হতে পারে। ডাক্তারের পরামর্শ নতুন খাবার সম্পর্কে সঠিক ধারণা দিতে এবং সম্ভাব্য ঝুঁকি এড়াতে সাহায্য করে।
নতুন সবজি খাওয়ার পর যদি কোনো ধরনের অস্বস্তি, যেমন অ্যালার্জি, পেটে ব্যথা বা অন্য কোনো সমস্যা দেখা দেয়, তবে সঙ্গে সঙ্গে সেই খাবারটি বন্ধ করে দেওয়া উচিত এবং চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করা উচিত। গর্ভাবস্থায় যেকোনো নতুন খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রেই সাবধানতা অবলম্বন করা বুদ্ধিমানের কাজ।
অতিরিক্ত পরিমাণে সবজি খাওয়া
যদিও শাকসবজি স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী, তবুও গর্ভাবস্থায় কোনো সবজি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়। অতিরিক্ত পরিমাণে কোনো একটি নির্দিষ্ট সবজি খেলে তা শরীরের পুষ্টির ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। এছাড়াও, কিছু সবজির অতিরিক্ত intake গ্যাস, পেট ফাঁপা বা হজমের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, যা গর্ভবতী মায়ের জন্য অস্বস্তিকর হতে পারে।
গর্ভবতী মহিলাদের উচিত একটি সুষম খাদ্যতালিকা অনুসরণ করা, যেখানে বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি পরিমিত পরিমাণে অন্তর্ভুক্ত থাকে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় বিভিন্ন রঙের ও পুষ্টি উপাদানের সবজি যোগ করা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। তবে, কোনো একটি সবজির উপর অতিরিক্ত নির্ভরতা পরিহার করা উচিত।
এলার্জি
গর্ভবতী মহিলাদের অবশ্যই সেইসব সবজি এড়িয়ে চলা উচিত যেগুলোতে তাদের আগে থেকে অ্যালার্জি রয়েছে। গর্ভাবস্থায় অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া মায়ের ও শিশুর উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর হতে পারে। অ্যালার্জির কারণে শ্বাসকষ্ট, ত্বকে ফুসকুড়ি, বমি বা অন্যান্য গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে।
যদি কোনো গর্ভবতী মহিলা কোনো নির্দিষ্ট সবজিতে অ্যালার্জিক হন, তবে সেই সবজিটি সম্পূর্ণভাবে তার খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। এমনকি সামান্য পরিমাণেও সেই সবজি গ্রহণ করা উচিত নয়। খাদ্য নির্বাচনের সময় প্যাকেজের উপাদানগুলো ভালোভাবে দেখে নেওয়া এবং রেস্তোরাঁয় খাবার অর্ডার করার সময় অ্যালার্জির বিষয়ে অবগত করা জরুরি।
হার্টের ব্যথা কেমন হয় ও হার্টের ব্যথা বুকের কোন পাশে হয় জানতে এই পোস্টটি পড়ে নিন।

টিনজাত বা সংরক্ষিত সবজি
গর্ভাবস্থায় টিনজাত বা সংরক্ষিত সবজি না খাওয়াই ভালো। এই ধরনের সবজিতে অতিরিক্ত লবণ, চিনি এবং প্রিজারভেটিভ (সংরক্ষণকারী রাসায়নিক পদার্থ) মেশানো থাকে, যা গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ করলে রক্তচাপ বাড়তে পারে এবং প্রিজারভেটিভের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব নিয়েও উদ্বেগ থাকে।
তাজা এবং মৌসুমী সবজি গর্ভাবস্থায় খাওয়ার জন্য সবচেয়ে ভালো। যদি টিনজাত বা সংরক্ষিত সবজি খেতেই হয়, তবে কম লবণ ও চিনিযুক্ত এবং ভালো ব্র্যান্ডের পণ্য বেছে নেওয়া উচিত। তবে, যতটা সম্ভব তাজা সবজি খাওয়াই শ্রেয়, কারণ এতে প্রাকৃতিক ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ অক্ষুণ্ণ থাকে।
নিরাপদ সবজি খাওয়ার উপায়
গর্ভাবস্থায় মায়ের স্বাস্থ্য এবং গর্ভের শিশুর সঠিক বিকাশের জন্য পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। তবে, কিছু সবজি আছে যা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য নিরাপদ নাও হতে পারে। তাই, কোন সবজিগুলো এড়িয়ে চলা উচিত সে সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। নিরাপদ থাকার জন্য কিছু নিয়ম মেনে চলাও দরকার।
প্রথমত, গর্ভবতী মহিলাদের অবশ্যই কাঁচা বা আধা-সিদ্ধ সবজি খাওয়া উচিত নয়। এর কারণ হলো, এই ধরনের সবজিতে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া, যেমন লিসটেরিয়া, সালমোনিলা বা ই. কোলাই থাকতে পারে। এই জীবাণুগুলো গর্ভবতী মায়ের শরীরে প্রবেশ করে সংক্রমণ ঘটাতে পারে, যা গর্ভপাত বা অপরিণত প্রসবের মতো গুরুতর জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। তাই, যেকোনো সবজি খাওয়ার আগে তা ভালোভাবে ধুয়ে এবং উচ্চ তাপে রান্না করে নেওয়া আবশ্যক।
দ্বিতীয়ত, কিছু নির্দিষ্ট সবজি আছে যা গর্ভাবস্থায় পরিহার করা উচিত, এমনকি রান্না করার পরেও। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কাঁচা বা আধা পাকা পেঁপে, কারণ এতে গর্ভাশয়ের সংকোচন সৃষ্টিকারী উপাদান থাকতে পারে। অতিরিক্ত পরিমাণে বেগুন খাওয়াও কারো কারো ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। অ্যালোভেরা বা সজিনার মতো সবজিও গর্ভাবস্থায় এড়িয়ে যাওয়া উচিত, কারণ এগুলোর কিছু উপাদান গর্ভের জন্য নিরাপদ নাও হতে পারে।
সবশেষে, গর্ভবতী মহিলাদের উচিত তাজা ও মৌসুমী সবজি বেছে নেওয়া। টাটকা সবজিতে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ ভরপুর থাকে এবং প্রক্রিয়াজাত বা বাসি সবজির তুলনায় এগুলোতে ক্ষতিকর জীবাণুর ঝুঁকিও কম থাকে। যেকোনো নতুন সবজি খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। নিজের এবং সন্তানের সুস্থতার জন্য গর্ভাবস্থায় খাদ্য নির্বাচনে বিশেষ যত্ন নেওয়া অপরিহার্য।
উপসংহার
পরিশেষে বলা যায়, গর্ভাবস্থায় বেশিরভাগ সবজি মায়ের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হলেও, কিছু নির্দিষ্ট সবজি খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কাঁচা বা আধা-সিদ্ধ সবজি পরিহার করা এবং কাঁচা পেঁপে, অতিরিক্ত বেগুন, অ্যালোভেরা ও সজিনার মতো সবজি এড়িয়ে চলা বুদ্ধিমানের কাজ। নিজের এবং গর্ভের শিশুর সুরক্ষার জন্য যেকোনো নতুন সবজি খাদ্যতালিকায় যোগ করার আগে অথবা কোনো সন্দেহ হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। সঠিক খাদ্যাভ্যাস গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপায়।
লিখেছেন-
ডাঃ সাইফুল ইসলাম, পিটি
বিপিটি ( ঢাবি ), এমপিটি ( অর্থোপেডিকস ) – এন.আই.পি.এস, ইন্ডিয়া
পিজি.সি. ইন আকুপাংচার, ইন্ডিয়া
স্পেশাল ট্রেইন্ড ইন ওজন থেরাপি, ইউ.এস.এ এবং ওজোন ফোরাম, ইন্ডিয়া।
ফিজিওথেরাপি কনসালট্যান্ট, ভিশন ফিজিওথেরাপি সেন্টার।
পরামর্শ পেতে – 01760-636324 , 01932-797229 (সকাল ৯.০০ থেকে রাত ৯.০০ টা) এই নম্বরে কল করুন এবং এপয়েন্টমেন্ট নিয়ে নিন।
আমাদের ফেইসবুক পেইজঃ ভিশন ফিজিওথেরাপি সেন্টার