হার্ট স্ট্রোক এর লক্ষণ কি , হার্ট স্ট্রোক কেন হয় ও এর চিকিৎসা

Table of Contents

হার্ট স্ট্রোক কি?

হার্ট স্ট্রোক হলো একটি মারাত্মক মেডিকেল ইমার্জেন্সি যাতে মস্তিষ্কের রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে মস্তিষ্কের কোষগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা মারা যায়। হার্ট স্ট্রোকের লক্ষণগুলি সাধারণত হঠাৎ করে শুরু হয় এবং দ্রুত বাড়তে থাকে। হার্ট স্ট্রোক এর লক্ষণ সম্পর্কে জানুন।

হার্ট স্ট্রোক এর লক্ষণ কি?

হার্ট স্ট্রোক এর লক্ষণগুলো নিম্নরুপ:

  • শরীরের এক পাশে অবশতা বা দুর্বলতা, বিশেষ করে মুখ, হাত বা পায়ে
  • কথা বলতে বা বোঝার সমস্যা
  • দৃষ্টি সমস্যা, যেমন এক চোখে অন্ধ হয়ে যাওয়া বা দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া
  • হাঁটাচলা করার সময় অসামঞ্জস্যতা
  • মাথা ঘোরা বা বমি বমি ভাব
  • খিঁচুনি
  • অজ্ঞান হয়ে যাওয়া

হার্ট স্ট্রোক এর লক্ষণ পুরুষ এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ভিন্ন হতে পারে। পুরুষদের ক্ষেত্রে, হার্ট স্ট্রোক এর সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হলো বুকে ব্যথা বা অস্বস্তি। মহিলাদের ক্ষেত্রে, হার্ট স্ট্রোকের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হলো শরীরের এক পাশে অবশতা বা দুর্বলতা।হার্ট স্ট্রোক এর লক্ষণ সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে ।

হার্ট স্ট্রোক এর কারণ কি?

হার্ট স্ট্রোক মূলত দুটি কারণে হতে পারে:

ইস্কেমিক স্ট্রোক (ischemic stroke): এই ধরণের হার্ট স্ট্রোক এর লক্ষণ হল মস্তিষ্কের রক্তনালীতে রক্ত জমাট বাঁধে এবং মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

 

ischemic strokeইস্কেমিক স্ট্রোকের কারণ

ইস্কেমিক স্ট্রোকের সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো থ্রম্বোসিস (thrombosis), যা রক্তনালীতে রক্ত জমাট বাঁধায়। রক্তনালীতে রক্ত জমাট বাঁধার অনেক কারণ থাকতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে:

  • উচ্চ রক্তচাপ (high blood pressure)
  • রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি (high cholesterol)
  • ডায়াবেটিস (diabetes)
  • ধূমপান (smoking)
  • অনিয়মিত হৃদস্পন্দন (irregular heartbeat)
  • অতিরিক্ত ওজন (obesity)
  • অলস জীবনযাপন (sedentary lifestyle)

হেমোরেজিক স্ট্রোক (hemorrhagic stroke): এই ধরণের হার্ট স্ট্রোক এর লক্ষণ হল মস্তিষ্কের রক্তনালী ফেটে যায় এবং মস্তিষ্কে রক্তপাত হয়।

hemorrhagic stroke

হেমোরেজিক স্ট্রোকের কারণ

হেমোরেজিক স্ট্রোকের সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো অ্যানিউরিজম (aneurysm), যা মস্তিষ্কের রক্তনালীর একটি দুর্বল স্থান। অ্যানিউরিজম ফেটে গেলে মস্তিষ্কে রক্তপাত হয়। অ্যানিউরিজম ফেটে যাওয়ার অন্যান্য কারণগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • উচ্চ রক্তচাপ
  • কোকেন এবং অ্যামফিটামিনের মতো ড্রাগ ব্যবহার (cocaine and amphetamine use)

হার্ট স্ট্রোক প্রতিরোধ এর উপায় কি ?

হার্ট স্ট্রোক একটি মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা যা প্রতিরোধ করা সম্ভব। হার্ট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি নিতে পারেন:

  • নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান। ডাক্তার আপনার হার্টের স্বাস্থ্য এবং অন্যান্য স্ট্রোক-ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার জন্য পরীক্ষা করতে পারেন।
  • উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করুন। উচ্চ রক্তচাপ রক্তনালীগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং স্ট্রোক হতে পারে।
  • রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করুন।
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করুন। ডায়াবেটিস রক্তনালীগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং স্ট্রোক হতে পারে। আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্য করুন।
  • ধূমপান ত্যাগ করুন। ধূমপান রক্তনালীগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং স্ট্রোক হতে পারে। 
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন। ব্যায়াম স্ট্রোক প্রতিরোধ করতে পারে।
  • স্বাস্থ্যকর খাবার খান। স্বাস্থ্যকর খাবার রক্তচাপ, কোলেস্টেরল এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। প্রচুর ফল, শাকসবজি, গোটা শস্য এবং পাতলা প্রোটিন খান।

এই পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করে আপনি আপনার হার্টের স্বাস্থ্য উন্নত করতে এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে পারেন।

হার্ট স্ট্রোক এর চিকিৎসা?

হার্ট স্ট্রোকের চিকিৎসার লক্ষ্য হলো মস্তিষ্কে পুনরায় রক্ত সরবরাহ করা এবং ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যুর ক্ষতি কমানো।হার্ট স্ট্রোক এর লক্ষণ সম্পর্কে জানুন ও  চিকিৎসা করুন।

হার্ট স্ট্রোকের চিকিৎসা সাধারণত দুটি পর্যায়ে করা হয়:

আক্রান্ত হওয়ার প্রথম  ২৪ ঘন্টার মধ্যে (acute phase): এই পর্যায়ে, চিকিৎসার লক্ষ্য হলো মস্তিষ্কে পুনরায় রক্ত সরবরাহ করা। এটি সাধারণত অ্যান্টিকোয়াগুলেন্ট, অ্যান্টিপ্লেটলেট বা টি-পিএই (thrombolysis therapy) দিয়ে করা হয়।

আক্রান্ত হওয়ার পরে (chronic phase): এই পর্যায়ে, চিকিৎসার লক্ষ্য হলো ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যুর ক্ষতি কমানো এবং রোগীর পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করা।

আরও জানুন :বুকে পিঠে ব্যথা হলে করণীয় ও তার কারণ

আক্রান্ত হওয়ার প্রথম ২৪ ঘন্টার মধ্যে চিকিৎসা

অ্যান্টিকোয়াগুলেন্ট (anticoagulants): অ্যান্টিকোয়াগুলেন্টগুলি রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করে। ইস্কেমিক স্ট্রোকের ক্ষেত্রে, অ্যান্টিকোয়াগুলেন্টগুলি মস্তিষ্কে আরও রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

অ্যান্টিপ্লেটলেট (antiplatelets): অ্যান্টিপ্লেটলেটগুলি রক্তনালীর প্রাচীরে রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করে। ইস্কেমিক স্ট্রোকের ক্ষেত্রে, অ্যান্টিপ্লেটলেটগুলি মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

টি-পিএই (thrombolysis therapy): টি-পিএই রক্তনালীতে জমাট বাঁধা রক্ত দ্রবীভূত করতে সাহায্য করে। ইস্কেমিক স্ট্রোকের ক্ষেত্রে, টি-পিএই আক্রান্ত ব্যক্তিকে আক্রান্ত হওয়ার ৪.৫ ঘণ্টার মধ্যে দেওয়া হলে সবচেয়ে কার্যকর।

আক্রান্ত হওয়ার পরে চিকিৎসা

পুনর্বাসন (rehabilitation)

পুনর্বাসন প্রোগ্রামগুলি রোগীদের শারীরিক, মানসিক এবং ভাষাগত ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে। পুনর্বাসন প্রোগ্রামগুলি সাধারণত নিম্নলিখিতগুলি অন্তর্ভুক্ত করে:

ফিজিক্যাল থেরাপি (physical therapy): এটি রোগীর দেহের শক্তি, ভারসাম্য এবং চলাচল উন্নত করতে সাহায্য করে।

physical therapy

ওকুপেশনাল থেরাপি (occupational therapy): এটি একটি বিজ্ঞান-ভিত্তিক চিকিৎসা যা শারীরিক, মানসিক, সামাজিক এবং পরিবেশগত সমস্যাগুলি দূর করে একজন ব্যক্তির যতটা সম্ভব দৈনন্দিন ক্রিয়াকলাপে অংশগ্রহণ করার ক্ষমতা উন্নত করার লক্ষ্যে চিকিৎসা প্রদান করে। এটি রোগীদের দৈনন্দিন কাজ করতে সাহায্য করে, যেমন খাওয়া, কাপড় পরা এবং গোসল করা।

occupational therapy

স্পিস থেরাপি (speech therapy): এটি রোগীদের ভাষা এবং যোগাযোগের ক্ষমতা উন্নত করতে সাহায্য করে।

speech therapy

ঔষধ (medication): হার্ট স্ট্রোকের পরে, রোগীদের প্রায়শই ঔষধ দেওয়া হয় যা তাদের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এই ঔষধগুলির মধ্যে রয়েছে:

অ্যান্টিকোয়াগুলেন্ট (anticoagulants): এই ঔষধগুলি রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করে।

অ্যান্টিপ্লেটলেট (antiplatelets): এই ঔষধগুলি রক্তনালীর প্রাচীরে রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করে।

রক্তচাপ কমানো (blood pressure medications): উচ্চ রক্তচাপ হার্ট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। রক্তচাপ কমানো ঔষধগুলি হার্ট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।

কোলেস্টেরল কমানো (cholesterol-lowering medications): উচ্চ কোলেস্টেরল হার্ট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।

কোলেস্টেরল কমানো ঔষধগুলি হার্ট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।

হার্ট স্ট্রোক এর তাৎক্ষণিক ঘরোয়া চিকিৎসা কি?

হার্ট স্ট্রোকের তাৎক্ষণিক চিকিৎসার জন্য কোনো ঘরোয়া চিকিৎসা নেই। তবে, আপনি কিছু জিনিস করতে পারেন যা আক্রান্ত ব্যক্তিকে সাহায্য করতে পারে:

  • প্রথমত, নিশ্চিত করুন যে আক্রান্ত ব্যক্তি নিরাপদ অবস্থানে আছেন।
  • যদি আক্রান্ত ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে যান, তাহলে তাকে পাশে শুইয়ে দিন এবং তার মাথার নিচের দিকে একটি বালিশ রাখুন।
  • যদি আক্রান্ত ব্যক্তির শ্বাস নিতে সমস্যা হয়, তাহলে তাকে মাথা নিচু করে এবং পিঠে চাপ দিয়ে তাকে সাহায্য করুন।
  • যদি আক্রান্ত ব্যক্তির কথা বলতে বা বোঝার সমস্যা হয়, তাহলে তাকে শান্ত করুন এবং তাকে সাহায্য করার জন্য একজন বন্ধু বা পরিবারের সদস্যকে ডাকুন।

হার্ট স্ট্রোকের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা পেতে আক্রান্ত ব্যক্তিকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া জরুরি। হাসপাতালে, আক্রান্ত ব্যক্তিকে রক্তপাত প্রতিরোধ করার জন্য অ্যান্টিকোয়াগুলেন্ট বা অ্যান্টিপ্লেটলেট ঔষধ দেওয়া যেতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তির মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ পুনঃস্থাপন করার জন্য টি-পিএই (thrombolysis therapy) বা স্ট্রোক সার্জারির মতো অন্যান্য চিকিৎসাও করা যেতে পারে।

হার্ট স্ট্রোকের তাৎক্ষণিক চিকিৎসার জন্য কিছু ঘরোয়া চিকিৎসার আছে , তবে এর কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই যে এগুলি কার্যকর। এই চিকিৎসাগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • অ্যালকোহল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলা।
  • লবণ জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলা।
  • আদা বা রসুন খাওয়া।
  • একটি নির্দিষ্ট ধরণের ম্যাসাজ করা।

এই চিকিৎসাগুলি চেষ্টা করার আগে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলা গুরুত্বপূর্ণ ।

হার্ট স্ট্রোক রোগীর জন্য ব্যায়াম ও এর প্রয়োজনীয়তা  

স্ট্রোক পুনরুদ্ধারের জন্য ব্যায়াম হল এমন একটি শারীরিক থেরাপি যা স্ট্রোক আক্রান্ত ব্যক্তিদের শারীরিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এবং তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরে যেতে সাহায্য করে। ব্যায়াম পেশী শক্তি, ভারসাম্য এবং সমন্বয় উন্নত করতে, চলাচল উন্নত করতে এবং দৈনন্দিন কাজগুলি সম্পাদন করার ক্ষমতা উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।

 স্ট্রোক পুনরুদ্ধারের জন্য ব্যায়াম বিভিন্ন ধরণের হতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে:

  • পেশী শক্তি এবং ভারসাম্য উন্নত করতে সাহায্য করার জন্য প্রতিরোধ ব্যায়াম। প্রতিরোধ ব্যায়াম হল এমন একটি ব্যায়াম যেখানে আপনি আপনার পেশীগুলিকে একটি প্রতিরোধের বিরুদ্ধে কাজ করতে বাধ্য করেন। এটি পেশী টিস্যু গঠন এবং শক্তি উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।
  • চলাচল উন্নত করতে সাহায্য করার জন্য গতি ব্যায়াম। গতি ব্যায়াম হল এমন একটি ব্যায়াম যা আপনাকে আপনার শরীরকে সরানোর জন্য প্রয়োজনীয় গতিশীলতা এবং সমন্বয় উন্নত করতে সাহায্য করে। এর মধ্যে হাঁটা, দৌড়ানো, সাইকেল চালানো এবং সাঁতার কাটা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
  • দৈনন্দিন কাজগুলি সম্পাদন করার ক্ষমতা উন্নত করতে সাহায্য করার জন্য ফাংশনাল ব্যায়াম অত্যন্ত জরুরী। ফাংশনাল ব্যায়াম হল এমন একটি ব্যায়াম যা আপনাকে আপনার দৈনন্দিন জীবনে আপনার প্রয়োজনীয় কাজগুলি সম্পাদন করতে সাহায্য করে। এর মধ্যে টেবিল থেকে কিছু তুলতে, বাথরুমে যাওয়া এবং পোশাক পরাও অন্তর্ভুক্ত।

স্ট্রোক পুনরুদ্ধারের জন্য ব্যায়াম একজন যোগ্য ফিজিওথেরাপিস্টের তত্ত্বাবধানে করা উচিত। ফিজিওথেরাপিস্ট আপনার ব্যক্তিগত চাহিদা এবং লক্ষ্যগুলির উপর ভিত্তি করে আপনার জন্য নিরাপদ ও উপযোগী ব্যায়াম পরিকল্পনা করবেন।

স্ট্রোক পুনরুদ্ধারের জন্য ব্যায়াম করার সময় যেসব টিপসগুলো মনে রাখবেন:

  • আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। আপনার ডাক্তারই নিশ্চিত করে বলতে পারেন যে, কোন ব্যায়ামগুলো আপনার জন্য নিরাপদ ও উপযোগী ।
  • ধীরে ধীরে শুরু করুন। আপনার শরীরকে নতুন কার্যকলাপের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সময় দিন।
  • আপনার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানুন। যদি আপনি ব্যথা বা ক্লান্তি অনুভব করেন তবে বিরতি নিন।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন। নিয়মিত ব্যায়াম আপনার পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করবে।

স্ট্রোক পুনরুদ্ধারের জন্য ব্যায়াম একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি আপনাকে আপনার শারীরিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এবং আপনার স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরে যেতে সাহায্য করতে পারে।

হার্ট স্ট্রোক ও ফিজিওথেরাপিস্ট এর ভূমিকা?

হার্ট স্ট্রোকের পরে, ফিজিওথেরাপিস্টরা রোগীদের শারীরিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এবং তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরে যেতে সাহায্য করতে পারে।

ফিজিওথেরাপিস্টরা হার্ট স্ট্রোকের পরে রোগীদের জন্য বিভিন্ন ধরণের চিকিৎসা প্রদান করতে পারে। এই চিকিৎসাগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • পেশী শক্তি এবং ভারসাম্য উন্নত করতে সাহায্য করার জন্য ব্যায়াম থেরাপি।
  • চলাচল এবং দৈনন্দিন কাজগুলিতে স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করার জন্য ফাংশনাল থেরাপি।
  • স্পিচ থেরাপি, যা কথা বলা এবং ভাষা বুঝতে সমস্যাগুলি কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে।
  • ওকুপেশনাল থেরাপি, যা দৈনন্দিন কাজগুলি সম্পাদন করতে সমস্যাগুলি কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে।

ফিজিওথেরাপিস্টরা রোগীর ব্যক্তিগত চাহিদা এবং লক্ষ্যগুলির উপর ভিত্তি করে একটি চিকিৎসা পরিকল্পনা তৈরি করবেন। চিকিৎসা পরিকল্পনাটি সাধারণত হাসপাতালে শুরু হয় এবং রোগী বাড়িতে ফিরে যাওয়ার পরেও চলতে থাকে।

হার্ট স্ট্রোকের পরে ফিজিওথেরাপির সুবিধাগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • শারীরিক কার্যকারিতা উন্নত করা।
  • স্বাস্থ্য এবং সুস্থতা উন্নত করা।
  • আত্মবিশ্বাস এবং স্বাধীনতা উন্নত করা।

হার্ট স্ট্রোক হয়েছে এমন যেকোনো ব্যক্তির উচিত একটি ফিজিওথেরাপিস্টের সাথে পরামর্শ করা। ফিজিওথেরাপিস্টরা রোগীদের হার্ট স্ট্রোকের প্রভাব কাটিয়ে উঠতে এবং তাদের জীবনযাত্রার উন্নতি করতে সাহায্য করতে পারে।

হার্ট স্ট্রোক এর লক্ষণ , প্রতিরোধের উপায় ও চিকিৎসা সম্পর্কে জেনে , হার্ট স্ট্রোক প্রতিরোধ করুন ও রোগীর জীবন নিরাপদে রাখুন।

সম্পর্কিত প্রশ্নসমূহ

বুকে ব্যথা কি সবসময় হার্ট স্ট্রোকের লক্ষণ?

না। যদিও বুকে ব্যথা বা অস্বস্তি একটি উপসর্গ হতে পারে, হার্ট স্ট্রোক হঠাৎ মাথা ঘোরা, তীব্র মাথাব্যথা, বা হাঁটতে অসুবিধা হিসাবেও প্রকাশ পেতে পারে।

কারো হার্ট স্ট্রোক হলে আমি কিভাবে বুঝবো?

হঠাৎ এক বা উভয় চোখে দেখা সমস্যা, ভারসাম্য হারানো এবং কোনো অজ্ঞাত কারণ ছাড়াই তীব্র মাথাব্যথার মতো লক্ষণগুলির কারোর মধ্যে দেখা দিলে জরুরি চিকিৎসকের সহায়তা নিন।

হার্ট স্ট্রোকের লক্ষণে বয়স কী ভূমিকা পালন করে?

বয়সের সাথে সাথে হার্ট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়লেও এটি যে কোনো বয়সে হতে পারে। তবে লক্ষণগুলি পরিবর্তিত হতে পারে এবং হঠাৎ দুর্বলতা বা কথা বলতে অসুবিধা হওয়ার মতো লক্ষণগুলি সম্পর্কে সচেতন হওয়া অপরিহার্য।

মানসিক চাপ কি হার্ট স্ট্রোকের লক্ষণগুলিতে অবদান রাখতে পারে?

হ্যাঁ, মানসিক চাপ একটি কারণ হতে পারে। স্ট্রেস উচ্চ রক্তচাপ এবং হার্ট স্ট্রোকের জন্য অন্যান্য ঝুঁকির কারণগুলিতে অবদান রাখতে পারে।

কেউ যদি হার্ট স্ট্রোকের সন্দেহ করে, নিজের বা অন্য কারোর কি করা উচিত?

আপনি বা অন্য কেউ হার্ট স্ট্রোকের লক্ষণ অনুভব করলে অবিলম্বে জরুরি পরিষেবাগুলিতে কল করুন। সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং দ্রুত চিকিৎসা নিন।

Dr. Saiful Islam
Dr. Saiful Islam

Consultant Physiotherapist
BPT (DU), MPT (Ortho)
PGC in Acupuncture (India)
Specially trained in Ozone therapy

Articles: 4