ছেলেদের ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার কারন

ছেলেদের ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া বা প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারা এটা বর্তমানে সাধারণ একটি স্বাস্থ্য সমস্যা। ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া বলতে আমরা আসলে কি বুঝি। সাধারণত একজন মানুষের দৈনিক ছয় থেকে আটবার প্রস্রাব হতে পারে। যদি আপনি পর্যাপ্ত পরিমান পানি পান করে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনার প্রস্রাব দশবারও হতে পারে।

তবে যারা ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যায় ভোগেন, তারা তাদের দৈনন্দিন কাজে অনেক ধরনের অসুবিধায় পড়ে থাকেন। অনেকে মনে করেন ছেলেদের ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার কারন ডায়াবেটিস কিন্তু না তা নাও হতে পারে। শুধু ডায়াবেটিস হলেই যে ঘন ঘন প্রস্রাব হবে বিষয়টি এমন না, এটা আরো অনেক ধরনের রোগের লক্ষন হতে পারে।

ছেলেদের ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার কারন

ছেলেদের ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার কারনঃ

ছেলেদের ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার পিছনে অনেক ধরনের কারন থাকতে পারে। যেসব কারনে ছেলেদের ঘন ঘন প্রস্রাব হয় তা হলো-

  • ইউরিনারি ট্র‍্যাক্ট ইনফেকশন ( UTI)- শরীরে যদি জ্বর থাকে এবং এর পাশাপাশি যদি ঘন ঘন প্রস্রাব হয়, তলপেটে ব্যথা হয় তাহলে বুঝতে হবে প্রস্রাবের নালীতে ইনফেকশন হয়েছে।
  • ডায়াবেটিস – হঠাৎ করে যদি অস্বাভাবিকভাবে ঘন ঘন প্রস্রাব হয় তাহলে এটি ডায়াবেটিস এর লক্ষন কারন এতে করে শরীরের অতিরিক্ত গ্লুকোজ প্রস্রাবের মাধ্যমে বের হয়ে যায়।
  • কোমর ব্যথা- কোমর ব্যথা বিভিন্ন কারনে হতে পারে তবে ডিস্ক প্রলাপ্স জনিত কোমর ব্যথায় প্রস্রাব ধরে রাখতে সমস্যা হয় এবং সেই সাথে সেক্সুয়াল সমস্যাও দেখা দেয়।
  • প্রস্টেট বড় হয়ে যাওয়া- ছেলেদের প্রস্টেট গ্লান্ড বড় হয়ে গেলে সেটা ইউথ্রেরাতে চাপ দেয়। ইউথ্রেরা হলো একটা নালী যা প্রস্রাবের থলি থেকে পেনিস পর্যন্ত আসে। ফলে ইউথ্রেরাতে চাপ দিলে প্রস্রাবের থলি সংকুচিত হয়ে যায়। তাই অল্প প্রস্রাব জমা হলেও তা বের হয়ে যায়।
  • নিউরোলজিকাল সমস্যা- স্ট্রোক, স্পাইনাল কর্ড ইনজুরি সহ আরো অনেক ধরনের নিউরোলজিকাল সমস্যায় নার্ভ ডেমেজ হয়ে যায় ফলে ঘন ঘন হয়।
  • ওষুধ – অনেক সময় কিছু ওষুধ সেবনের ফলে বার বার প্রস্রাব হতে পারে।

ছেলেদের ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা প্রতিরোধে করনীয়ঃ

ছেলেদের ঘন ঘন প্রস্রাব প্রতিরোধ করার জন্য কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে তাহলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব যেমন-

  • সর্বপ্রথম যে কাজটি করতে হবে তা হলো বিছানায় যাওয়ার আগে তরল জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে। এতে করে ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার সমস্যা হবে না।
  • চা, কফি বা ক্যাফেইনযুক্ত খাবার, অ্যালকোহল, সোডা এসব খাওয়ার অভ্যাস থাকলে তা কমিয়ে আনতে হবে।
  • ডিস্ক প্রলাপ্সজনিত কোমর ব্যথার ক্ষেত্রে প্রস্রাব ধরে রাখতে সমস্যা হলে আগে ডিস্ক প্রলাপ্সের সমস্যা সমাধান করতে হবে। যদি একেবারেই প্রস্রাব ধরে রাখতে সমস্যা হয় তাহলে অবশ্যই নিউরোসার্জনের সাথে এপয়েন্টম্যান্ট করতে হবে।
  • ইউরিনারি ব্লাডারকে পুনরায় ট্রেনিং করাতে হবে। অর্থাৎ নির্দিষ্ট সময় বিরতি দিয়ে প্রতিদিন একই সময় প্রস্রাব করাতে হবে। এতে ব্লাডার (প্রস্রাবের থলি) অনেক্ক্ষণ প্রস্রাব ধরে রাখতে শিখে।
  • প্রস্রাবের থলি এবং প্রস্রাবের নালীর চারদিকে পেলভিক ফ্লোর মাসল থাকে। এই মাসলগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে। তাহলে ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা থাকবেনা। এটির জন্য কিগল এক্সারসাইজ করতে হবে।

ছেলেদের ঘন ঘন প্রস্রাব বন্ধের ঘরোয়া সমাধানঃ

ঘন ঘন প্রস্রাব সহজেই মানুষের অভ্যাসে পরিনত হতে পারে। অনেক সময় ঘরোয়া কিছু কাজের মাধ্যমে এই ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার সমস্যা সমাধান করা যায়। যেমন-

আপনি প্রতিদিন কতটুকু তরল খাচ্ছেন বা খাওয়া উচিত এটা ভালোভাবে জানতে হবে। এক্ষেত্রে যারা অনেক বেশী পরিশ্রমের কাজ করে থাকেন তাদের দৈনিক ৫ লিটার পানি খেলে ২ লিটার প্রস্রাব হওয়াটা স্বায়। তাই প্রস্রাব ঘন ঘন হওয়ার পিছনে পানি খাওয়াটা অনেক বড় একটা কারন।
তাই আপনার শরীরের জন্য যতটুকু পানি খাওয়া প্রয়োজন ততটুকু পানিই পান করুন।
আবার শীতকালে মানুষের শরীর ওইভাবে ঘামায় না তাই ওইসময় পানি বেশী পান করলে ঘন ঘন প্রস্রাব হতে পারে।

উচ্চ আঁশযুক্ত বা ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার গ্রহন করতে হবে। এর ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়ে প্রস্রাবের সমস্যাও দূর হয়।
খাবার গ্রহনের ক্ষেত্রে অনেক খেয়াল রাখতে হয়।
কি কারনে ঘন ঘন প্রস্রাব হচ্ছে সেই কারন আগে বের করতে হবে এর পর এর সমাধান করতে হবে অর্থাৎ সঠিক চিকিৎসা নিতে হবে।

আরো জানতে দেখুন : ঘন ঘন প্রসাব থেকে মুক্তির উপায় | ঘন ঘন প্রস্রাব হলে কি করবো | প্রস্রাবের সমস্যা ও সমাধান |

আরো জানতে দেখুন : ঘন ঘন প্রস্রাব কেন হয় এবং এর সঠিক চিকিৎসা/ ঘন ঘন প্রস্রাব হলে করনীয়/ ঘন ঘন প্রস্রাব দূর করার উপায়

আরো জানতে দেখুন : ঘন ঘন প্রস্রাবের স্থায়ী সমাধান / প্রস্রাব ধরে রাখার সমস্যায় করনীয় কি / প্রস্রাব আটকে রাখতে না পারা

ছেলেদের ঘন ঘন প্রস্রাব হলে কি করনীয়ঃ

ছেলেদের ঘন ঘন প্রস্রাব নিয়ন্ত্রণ নির্ভর করে এর অন্তর্নিহিত কারনের উপর। যদি ঘন ঘন প্রস্রাবের পাশাপাশি আরো কোনো উপসর্গ থাকে তাহলে একজন ইউরোলজিস্টকে দেখানো উচিত।

ইউরোলজিস্ট আপনার ঘন ঘন প্রস্রাবের সঠিক কারন নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা করবেন যেমন- শারীরিক পরীক্ষা, ওজন, রক্তচাপসহ সামগ্রিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবেন। এছাড়াও প্রস্রাবের কোন ইনফেকশন আছে কিনা মূত্রাশয়ের শক্তি ও কার্যকারিতা পরীক্ষা করবেন ।

ছেলেদের ঘন ঘন প্রস্রাব অনেক কষ্টের একটা বিষয়। বয়স্ক থেকে কম বয়স্ক যেকোনো বয়সের ছেলেদের এই সমস্যা হতে পারে। তবে ঘন ঘন প্রস্রাবের সাথে যদি জ্বর, বমি, পিঠের নিচের দিকে ব্যথা এসব উপসর্গ থাকে তাহলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।

[sc_fs_multi_faq headline-0=”h3″ question-0=”স্বাভাবিক মানুষের কত বার প্রসাব হয়?” answer-0=”বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের মতে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৬ থেকে ৮ বার প্রস্রাব হওয়া উচিত। আবার পানির মাত্রা যদি পর্যাপ্ত হয় তবে ৪ থেকে ১০বার প্রস্রাব হওয়াকে স্বাভাবিক বলা যেতে পারে।” image-0=”” headline-1=”h3″ question-1=”২ ঘন্টা পর পর প্রস্রাব করা যাবে কি?” answer-1=”প্রতিটি লোক তার নিজস্ব সময়সূচীতে যান, তবে সাধারণত, ২৪ ঘন্টার মধ্যে ৬ থেকে ৮ বার প্রস্রাব করা স্বাভাবিক বলে বিবেচিত হয়। যিনি সুস্থ এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে গর্ভবতী নন৷ যদি আপনি এর বেশি প্রস্রাব করতে যান তবে আপনি ঘন ঘন প্রস্রাবের সম্মুখীন হতে পারেন। তাই ঘন ঘন প্রস্রাব নিজে থেকেই ঘটতে পারে এবং সব ক্ষেত্রে এটি স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ নয়।” image-1=”” headline-2=”h3″ question-2=”পুরুষের প্রস্রাব বন্ধ করা যায় না কেন?” answer-2=”আপনার একটি অতিরিক্ত সক্রিয় মূত্রাশয় থাকতে পারে। প্রস্টেট সমস্যা অথবা স্নায়বিক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা, যেমন স্ট্রোক এবং মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস একই অবস্থার জন্য বেশি প্রবণ, তিনি বলেছেন। তাই ঠিক কি হচ্ছে? আপনি যখন OAB-তে ভোগেন, তখন আপনার প্রস্রাব আটকে রাখার ক্ষমতার অভাব হয়।” image-2=”” headline-3=”h3″ question-3=”ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার কারণ কি কি?” answer-3=”মূত্রাশয়ে সংক্রমণ, রোগ, আঘাত বা জ্বালাপোড়া। মূত্রাশয়ের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করে এমন পেশি, স্নায়ু বা অন্যান্য টিস্যুতে গাঠনিক বা শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন। সুনির্দিষ্ট কিছু ক্যান্সারের চিকিৎসা। ওষুধ বা পানীয়, যা প্রস্রাবের উৎপাদন বাড়ায়। প্রস্রাবের সময় ব্যথা বা অস্বস্তি।” image-3=”” count=”4″ html=”true” css_class=””]

ধন্যবাদান্তে-

ডাঃ সৌরভ রহমান, পিটি
বিপিটি ( ঢাবি ), এম ডি এম আর (এস এস টি)
ইনচার্জ এন্ড সিনিয়র ফিজিওথেরাপিষ্ট,
ভিশন ফিজিওথেরাপি সেন্টার ।

পরামর্শ পেতে – 01760-636324 , 01932-797229 (সকাল ৯.০০ থেকে রাত ৯.০০ টা) 
ফেসবুকঃ ভিশন ফিজিওথেরাপি সেন্টার 

এপয়েন্টম্যান্ট নিতে ক্লিক করুনঃ Visionphysiotherapy.com

Visionphysiotherapy Centre
Visionphysiotherapy Centre
Articles: 74