প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারা, যাকে চিকিৎসা পরিভাষায় মূত্র নিয়ন্ত্রণহীনতা (Urinary Incontinence) বলা হয়, এটি একটি সাধারণ সমস্যা যা বহু মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলে। এই সমস্যার সবচেয়ে প্রচলিত কারণ হলো প্রস্রাবে ইনফেকশন। যখন মূত্রথলিতে জীবাণু সংক্রমণ ঘটে, তখন মূত্রথলি সংবেদনশীল হয়ে পড়ে এবং প্রস্রাব ধরে রাখার ক্ষমতা কমে যায়, যার ফলে ঘন ঘন প্রস্রাব করার প্রয়োজন হয় এবং অনেক সময় তা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
মূত্র নিয়ন্ত্রণহীনতা শুধু প্রস্রাবে ইনফেকশনের কারণেই হয় না, এর পেছনে আরও বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে। যেমন, বয়সের সাথে সাথে মূত্রথলির পেশীগুলো দুর্বল হয়ে যেতে পারে, যা প্রস্রাব ধরে রাখতে সাহায্যকারী নয়। এছাড়া, সন্তান প্রসবের পর বা প্রস্টেট গ্রন্থির সমস্যার কারণেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ, যেমন ডায়াবেটিসের ওষুধ, বা স্নায়ুতন্ত্রের কিছু রোগও এর কারণ হতে পারে। অতিরিক্ত ওজন, ধূমপান, এবং অতিরিক্ত ক্যাফেইন পান করার কারণেও মূত্র নিয়ন্ত্রণহীনতা বাড়তে পারে।
এটি বোঝা গুরুত্বপূর্ণ যে, প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারা বা প্রস্রাব ক্লিয়ার না হওয়া নিজে কোনো রোগ নয়, বরং এটি শরীরের অন্য কোনো সমস্যার একটি উপসর্গ বা লক্ষণ। তাই, এই সমস্যা দেখা দিলে এর মূল কারণ খুঁজে বের করা জরুরি। কারণটি যদি প্রস্রাবে ইনফেকশন হয়, তাহলে তার চিকিৎসা করলে সমস্যাটি সমাধান হয়ে যায়। যদি অন্য কোনো কারণে হয়, যেমন স্নায়ুর সমস্যা বা পেশীর দুর্বলতা, তাহলে সেই কারণ অনুযায়ী সঠিক চিকিৎসা নিলে সুস্থ হওয়া সম্ভব। তাই, এই সমস্যাকে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
মেয়েদের প্রস্রাব ক্লিয়ার না হওয়ার কারণ
মেয়েদের প্রস্রাব ক্লিয়ার না হওয়া বা প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারার পেছনে কিছু সুনির্দিষ্ট শারীরিক কারণ রয়েছে। এই কারণগুলো মূলত পেলভিক ফ্লোর পেশীগুলোর দুর্বলতার সাথে সম্পর্কিত।
নারীদের ক্ষেত্রে মাসিক চক্র, গর্ভধারণ এবং বিশেষ করে সন্তান প্রসবের কারণে পেলভিক ফ্লোর পেশীগুলো দুর্বল হয়ে যেতে পারে। পেলভিক ফ্লোর হলো একদল পেশী, যা মূত্রথলি, জরায়ু এবং মলদ্বারকে সমর্থন দেয়। যখন এই পেশীগুলো দুর্বল হয়ে যায়, তখন এগুলো স্বাভাবিকের চেয়ে নিচের দিকে ঝুলে যেতে পারে। এর ফলে প্রস্রাব সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ে এবং প্রস্রাব ক্লিয়ার হয় না। অনেক সময় জরায়ু ফেলে দেওয়ার মতো অস্ত্রোপচারের পরেও এই পেশীগুলো দুর্বল হতে পারে।
গর্ভধারণ এবং সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় পেটের নিচের অংশে প্রচুর চাপ পড়ে, যা পেলভিক ফ্লোর পেশীগুলোকে শিথিল করে দেয়। এর ফলে মূত্রথলি তার স্বাভাবিক অবস্থান থেকে কিছুটা নিচে নেমে যেতে পারে। এই স্থানচ্যুতির কারণে মূত্রনালীর ওপর যে চাপ থাকা উচিত, তা কমে যায়, ফলে প্রস্রাব ধরে রাখা সম্ভব হয় না। অতিরিক্ত ওজন বেড়ে গেলেও একই ধরনের সমস্যা হতে পারে, কারণ পেটের নিচের অংশে চাপ বেড়ে যায়। এই সকল কারণে মূত্রথলি ঠিকমতো কাজ করতে পারে না এবং প্রস্রাব ধরে রাখার ক্ষমতা কমে যায়।
ছেলেদের প্রস্রাব ক্লিয়ার না হওয়া বা ধরে রাখতে না পারার কারণ
পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারার কারণ প্রোস্টেট গ্ল্যান্ড বড় হওয়া, প্রোস্টেট ক্যানসারের কারণে সমস্যা দেখা দিতে পারে। বয়স বাড়ার সাথে মূত্রথলি অথবা মূত্রনালির পেশির দুর্বলতা ঘটে থাকে, প্রস্রাব ধরে রাখার সাভাবিক ক্ষমতা কমে যায়। অতিরিক্ত ওজন বা কিছু স্নায়ুগত রোগ, যেমন: ব্রেইন টিউমার, পারকিনসন, স্ট্রোক, মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস স্পাইনাল কর্ড ইনজুরি ইত্যাদি এছাড়াও অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, প্রস্রাবের সংক্রমণ এর ফলে প্রস্রাব ঝরতে পারে।
ছেলেদের ক্ষেত্রে অনেক সময় প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারার কারণ প্রস্টেট গ্রন্থির সার্জারির কারণে এ সমস্যা দেখা দেয়। এ সার্জারির সময় স্নায়ু বা মূত্রনালীর চারপাশের পেশীগুলোতে আঘাতপ্রাপ্ত হলে সেটা অকেজো হয়ে তার শক্তি কমে যেতে পারে। তখন মূত্রথলির উপর চাপ পড়লে প্রস্রাব আর ধরে রাখা সম্ভব হয় না।
মূত্রতন্ত্রের কোনো সংক্রমণ, প্রস্টেটের সমস্যা, মূত্রথলির ক্যানসার, স্ট্রোক, পারকিনসন ডিজিজ এসব কারণেও প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারার সমস্যা হতে পারে।
স্ট্রেস ও টেনশনের কারণে অনেক সময় এইরকম সমস্যা দেখা দেয়। কোনো কারণে মূত্রথলিতে চাপ পড়ে দেখা দেয়। যে সব কারণে মূত্রথলিতে চাপ পড়তে পারে, যেমন: কাঁশি দিলে, হাঁচি দিলে, জোরে হাসলে বা ভারী ওজনের জিনিস উপরের দিকে তুললে অথবা নিচের দিকে নামালে।

প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারার সমাধান
প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারার কারণ বা প্রস্রাব কেন ধরে রাখতে পারছেন না ,আগে সেই কারণ বের করতে হবে । প্রস্রাবে যদি ইনফেকশন থাকে , সেটা ইউরিন টেস্ট করে বের করতে হবে । তবে প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া হলে ধরে নেওয়া যায় , ইনফেকশনের জন্যই প্রস্রাব ধরে রাখতে পারছেন না , কিংবা প্রস্রাব ধরে রাখতে সমস্যা হচ্ছে । সেই ক্ষেত্রে আপনাকে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে , প্রস্রাবের রাস্তা পরিষ্কার রাখতে হবে , মেয়েদের ক্ষেত্রে প্রয়োজনের গরম পানি দিয়ে প্রস্রাবের রাস্তা পরিষ্কার করতে হবে । এছাড়া লক্ষ্য রাখতে হবে ঘামে ভিজে যেন প্রস্রাবের রাস্তা যেন ভেজা না থাকে ।

পেলভিক ফ্লোর মাসলে সমস্যার ক্ষেত্রে অবশ্যই কিগল এক্সারসাইজ করতে হবে । নিচের ভিডিও দেখে এক্সারসাইজগুলো করবেন ।
নিজের শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। যদি ধুমপান করে থাকেন ত্যাগ করুন এবং সুস্থ্যকর খাবারের অভ্যাস গড়ে তুলুন। যে সকল খাবার গুলো আঁশযুক্ত সে সকল খাবার বেশি খান। নিয়মিত পেলভিক ফ্লোর এক্সারসাইজ করুন সমস্যা কিছুটা কমে যাবে। প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম ও ইলেকট্রিক্যাল স্টিমুলেটর এর মাধ্যমে পেলভিক ফ্লোর মাংসপেশি শক্তি বৃদ্ধি করে ১ মাস থেকে দেড় মাসের মধ্যে এ সমস্যা অনেকটাই কমানো সম্ভব।
প্রতিরোধের উপায়
যে কোন সমস্যা শুরু হওয়ার আগে থেকেই সেটিকে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করা উচিত। প্রস্রাব ঝরে পড়ার সমস্যা কমিয়ে নিতে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। যেমন-
- প্রস্রাব করার পর প্রস্রাবের রাস্তা ভাল্ভাবে পরিষ্কার রাখুন
- বেশি করে পানি পান করুন
- কিগল এক্সারসাইজ করুন
- টেনশনমুক্ত থাকুন
- মূত্রথলির মাংসপেশীকে শক্তিশালী করুন এক্সারসাইজ এর মাধ্যমে
- অতিরিক্ত কফি খাওয়া বা চা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করুন
- ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন
প্রস্রাব ক্লিয়ার না হলে যেই ব্যায়ামগুলো করবেন
ব্রিজিং এক্সেরসাইজ
এই ব্যায়ামটি করতে প্রথমে মেঝেতে বা ম্যাটের ওপর চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন। আপনার দুটি পা হাঁটু থেকে ভাঁজ করুন এবং পায়ের পাতা মেঝেতে রাখুন। এবার কোমরের দিকটা ধীরে ধীরে ওপরের দিকে তুলুন, যতক্ষণ না আপনার শরীর কাঁধ থেকে হাঁটু পর্যন্ত একটি সরল রেখায় আসে। এই অবস্থায় ৫ সেকেন্ড ধরে রাখুন এবং তারপর ধীরে ধীরে কোমর নামিয়ে নিন। এই পদ্ধতিটি দিনে ৪ বার এবং প্রতিবারে ১০ থেকে ১৫ বার পুনরাবৃত্তি করুন। এই ব্যায়ামটি করলে আপনার নিতম্বের এবং পেলভিক পেশীগুলো শক্তিশালী হবে।
ব্লাডার ট্রেনিং
মূত্র ধরে রাখার ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য এটি একটি অত্যন্ত কার্যকর কৌশল। এই পদ্ধতিতে যখন প্রস্রাবের বেগ আসবে, তখন সাথে সাথে প্রস্রাব না করে ১০ মিনিট অপেক্ষা করার চেষ্টা করুন। ধীরে ধীরে এই সময়টা বাড়ানোর অভ্যাস করুন, যেমন ১৫ মিনিট, ২০ মিনিট বা তারও বেশি। এই কৌশলটি আপনার মূত্রথলিকে প্রশিক্ষণ দেবে যেন এটি বেশি সময় ধরে প্রস্রাব ধরে রাখতে পারে। বিস্তারিত জানতে ভিডিওটি দেখুন।
হোল্ড রিল্যাক্স টেকনিক
এই ব্যায়ামটি করতে প্রথমে মেঝেতে বসুন। একটি পা সামনের দিকে সোজা করে প্রসারিত করুন। এরপর সেই পা কিছুক্ষণের জন্য ওই অবস্থায় ধরে রাখুন। একইভাবে, অন্য পা-টিও সোজা করে ধরে রাখুন। এই কৌশলটি পেলভিক ফ্লোর পেশীর সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য পেশীগুলোকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
ডাবল ভোয়েডিং
এই পদ্ধতিটি মূলত যাদের প্রস্রাব করার পরেও মূত্রথলিতে প্রস্রাব থেকে যায়, তাদের জন্য খুব উপকারী। একবার প্রস্রাব করা শেষ হওয়ার পর, কিছু সময় অপেক্ষা করুন এবং তারপর আবার প্রস্রাব করার চেষ্টা করুন। এতে মূত্রথলি সম্পূর্ণ খালি হবে। এছাড়া, বেগ না এলেও প্রতি ২ বা ৪ ঘণ্টা পর পর প্রস্রাব করার অভ্যাস করা উচিত, যাতে মূত্রথলির ওপর অতিরিক্ত চাপ না পড়ে।
পেলভিক ফ্লোর মাসল এক্সারসাইজ
একটি চেয়ারে মেরুদণ্ড সোজা রেখে বসুন এবং শরীরকে একটু সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে দিন। এরপর প্রস্রাব ধরে রাখার জন্য যে মাংসপেশীগুলো ব্যবহার করেন, সেগুলো সংকুচিত করুন। এই অবস্থায় ৫ থেকে ১০ সেকেন্ড থাকুন এবং এরপর পেশীগুলো শিথিল করে দিন। এই প্রক্রিয়াটি দিনে ৪ বার এবং প্রতিবারে ১০ থেকে ১৫ বার করুন। এই ব্যায়ামটি মূত্র নিয়ন্ত্রণকারী পেশীগুলোকে শক্তিশালী করে।
কেগেল এক্সারসাইজ
মেঝেতে চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন এবং পা দুটো ফাঁক করে রাখুন। আপনার হাত দুটি শরীরের দুই পাশে সোজা করে রাখুন। এবার বুকের নীচ থেকে নিতম্ব পর্যন্ত উপরের দিকে উঠিয়ে দিন। এই অবস্থায় ১ থেকে ১৫ পর্যন্ত গুনতে থাকুন। এই সময় আপনার শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে। এরপর ধীরে ধীরে শরীরকে আবার নিচের দিকে নামিয়ে নিন। এই ব্যায়ামটি প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ বার করা উচিত।
মনে রাখবেন, কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা হলে তা অবহেলা করা উচিত নয়। প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারার সমস্যা থেকে ভবিষ্যতে আরও অনেক রোগ হতে পারে, তাই যত দ্রুত সম্ভব একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং তার তত্ত্বাবধানে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করুন।
প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারার ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা
প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারার সমস্যা, যা মেডিকেল ভাষায় মূত্র নিয়ন্ত্রণহীনতা (Urinary Incontinence) নামে পরিচিত, এটি একটি বিব্রতকর ও দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব ফেলে এমন একটি শারীরিক অবস্থা। বর্তমানে এর জন্য বেশ কিছু উন্নত ও কার্যকর ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে, যা অস্ত্রোপচার ছাড়াই এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
অত্যাধুনিক ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা পদ্ধতি
- পেলভিক চেয়ার: এটি একটি বিশেষ ধরনের চেয়ার, যা দেখতে সাধারণ চেয়ারের মতোই। রোগী এই চেয়ারে বসলে এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে পেলভিক ফ্লোর পেশীগুলোকে উদ্দীপিত করে। এটি এমনভাবে কাজ করে যে রোগী কোনো ধরনের কষ্ট বা প্রচেষ্টা ছাড়াই তার পেলভিক ফ্লোর পেশীগুলোকে শক্তিশালী করতে পারে। এই চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পূর্ণ আরামদায়ক এবং কার্যকর।
- কিগেল স্টিমুলেশন: এটি একটি বৈদ্যুতিক উদ্দীপনা পদ্ধতি। এতে একটি ছোট ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে পেলভিক ফ্লোর পেশীগুলোতে হালকা বৈদ্যুতিক সংকেত পাঠানো হয়। এই সংকেতগুলো পেশীগুলোকে সংকুচিত ও প্রসারিত হতে সাহায্য করে, যা তাদের শক্তি বাড়াতে খুবই সহায়ক। এটি उन রোগীদের জন্য বিশেষ কার্যকর, যারা নিজে নিজে কিগেল এক্সারসাইজ সঠিকভাবে করতে পারেন না।
- কিগেল এক্সারসাইজ: এটি পেলভিক ফ্লোর পেশী শক্তিশালী করার জন্য একটি বহুল পরিচিত ব্যায়াম। এই ব্যায়ামে নির্দিষ্ট সময় ধরে পেলভিক ফ্লোর পেশীগুলোকে সংকুচিত করে রাখতে হয় এবং তারপর ছেড়ে দিতে হয়। নিয়মিত কিগেল এক্সারসাইজ করলে প্রস্রাব ধরে রাখার ক্ষমতা অনেক বাড়ে। একজন ফিজিওথেরাপিস্টের তত্ত্বাবধানে সঠিক নিয়মে এই ব্যায়াম করলে দ্রুত সুফল পাওয়া যায়।
- আকুপাংচার: এটি একটি প্রাচীন চীনা চিকিৎসা পদ্ধতি, যেখানে শরীরের নির্দিষ্ট কিছু স্থানে খুব সূক্ষ্ম সুচ প্রবেশ করানো হয়। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, নির্দিষ্ট আকুপাংচার পয়েন্টে সুচ প্রয়োগ করলে মূত্রথলির কার্যকারিতা উন্নত হতে পারে এবং মূত্র নিয়ন্ত্রণহীনতার সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।
এই অত্যাধুনিক ফিজিওথেরাপি চিকিৎসাগুলো মূত্র নিয়ন্ত্রণহীনতার মতো সমস্যার জন্য খুবই কার্যকরী। তবে, সঠিক চিকিৎসার জন্য একজন বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপিস্টের পরামর্শ নেওয়া জরুরি, কারণ তিনিই রোগীর অবস্থা অনুযায়ী সবচেয়ে উপযুক্ত পদ্ধতিটি নির্ধারণ করতে পারবেন।
সম্পাদনায়
ডাঃ সাইফুল ইসলাম ,পিটি
বিপিটি ( ঢাবি – সিআরপি ), এমপিটি (অর্থো)
ভিশন ফিজিওথেরাপি সেন্টার
বাসা # ৪২, লেক ড্রাইভ রোড, সেক্টর # ৭,
উত্তরা, ঢাকা -১২৩০
পরামর্শ পেতে – 01760-636324 , 01932-797229 (সকাল ৯.০০ থেকে রাত ৯.০০ টা)
ফেসবুকঃ ভিশন ফিজিওথেরাপি সেন্টার
এপয়েন্টম্যান্ট নিতে ক্লিক করুনঃ Visionphysiotherapy.com
সাধারণ জিজ্ঞাসা
একজন মানুষ সারাদিনে কত লিটার প্রস্রাব করে?
প্রাপ্তবয়স্ক লোকের ক্ষেত্রে দৈনিক ০.৫ থেকে ২.৫ লিটার মূত্র উৎপন্ন হয়ে থাকে, তবে আপনি কতটুকু পানি পান করেছেন সেটার উপরে অনেক সময় নির্ভর করে।
সময়মত প্রস্রাব করতে না পারলে কি হয়?
আপনার মূত্রাশয় অথবা কিডনির ক্ষতি হতে পারে । এর কারণে আপনার মূত্রনালী থেকে প্রস্রাব বের করে দেয় এমন পথের বাধা বা আপনার মূত্রাশয়ের পেশীর অংশগুলোর কাজে সমস্যা হতে পারে।
কী পরীক্ষা দিয়ে প্রস্রাব আটকে রাখতে না পারার সমস্যাটি নিশ্চিত হওয়া যায়?
ভাগ মানুষের ক্ষেত্রে তাদের জীবনের ইতিহাস দিয়েই রোগ নির্ণয় করা যায়। এর মাধ্যমে পয়েন্ট আউট করা সম্ভব হয়, এবং রোগীর ঝুঁকি কতটুকু রয়েছে, সে কোন অবস্থায় রয়েছে, সে অবস্থা বোঝার জন্য ফিজিক্যাল পরীক্ষা করার প্রয়োজন হয়। ২০ ভাগ ল্যাবের পরীক্ষা সাহায্য করে সমস্যাটি পুরোপুরি বুঝার জন্য।
প্রস্রাব আটকে রাখতে না পারার অসুখটা প্রতিরোধযোগ্য?
জি অসুখটা প্রতিরোধযোগ্য। উন্নত বিশ্বের মানুষদের মধ্যে একই সমস্যা রয়েছে। তবে ব্যাপ্তিটা কম বা বেশি নয়। কারণ, অ্যান্টিনেটাল কেয়ার, পোস্ট নেটাল কেয়ার ওদের অনেক উন্নত হয়।