
কোমর ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা ও তার প্রতিকার
কোমর ব্যথা কি?
কোমর ব্যথা হল কটিদেশীয় অঞ্চলে ব্যথা যা পিঠের নিচের অংশ থেকে শুরু হয় এবং পায়ের দিকে ছড়িয়ে পরে। এটি একটি সাধারণ সমস্যা যা যেকোনো বয়সের মানুষের মধ্যে হতে পারে। কোমর ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা রয়েছে ।
কোমর ব্যথার অনেকগুলি কারণ হতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে:
পেশী বা টেন্ডন আঘাত: কোমর ব্যথার সবচেয়ে সাধারণ কারণ হল পেশী বা টেন্ডন আঘাত। এটি হঠাৎ করে বাঁকানো, মোচড়ানো বা ভারী বস্তু উত্তোলনের ফলে হতে পারে।
ডিস্ক প্রল্যাপস: ডিস্ক প্রল্যাপস হল একটি অবস্থা যেখানে মেরুদণ্ডের ডিস্ক থেকে অংশগুলি বেরিয়ে আসে এবং স্নায়ুগুলিকে সংকুচিত করে। এটি কোমর বা পায়ে তীব্র ব্যথা এবং অসাড়তা বা শিরশিরে অনুভূতির কারণ হতে পারে।
অস্টিওপোরোসিস: অস্টিওপোরোসিস হল একটি অবস্থা যেখানে হাড় দুর্বল এবং ভঙ্গুর হয়ে যায়। এটি কোমর ব্যথার কারণ হতে পারে, বিশেষ করে মেরুদণ্ডের হাড়গুলিতে ফাটল বা ভেঙে গেলে।
কোমর ব্যথার উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে:
- কোমর বা পায়ে ব্যথা
- অসাড়তা বা শিরশিরে অনুভূতি
- শক্তি হ্রাস
- পায়ের দুর্বলতা
- পেশী বা জয়েন্টগুলিতে ফোলাভাব
- জ্বর
কীভাবে কোমরের ব্যথার প্রতিরোধ করবেন?
কোমরের ব্যথার প্রতিরোধের জন্য নিম্নলিখিত টিপসগুলি অনুসরণ করুন:
- সঠিক ভঙ্গি বজায় রাখুন। হাঁটার সময়, বসে থাকার সময় এবং ভারী বস্তু উত্তোলনের সময় সঠিক ভঙ্গি বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
- নিয়মিত ব্যায়াম করুন। নিয়মিত ব্যায়াম মেরুদণ্ডের পেশীগুলিকে শক্তিশালী করতে এবং কোমর ব্যথার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
- আরাম করুন। কোমরের ব্যথার সময় বিশ্রাম নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
ব্যথানাশক ওষুধ নিন। ওভার-দ্য-কাউন্টার বা প্রেসক্রিপশন ব্যথানাশক ওষুধ কোমরের ব্যথার তীব্রতা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
গ্যাস্ট্রিক থেকে কোমর ব্যথার কারণ :
গ্যাস্ট্রিক থেকে কোমরের দুই পাশে ব্যথার কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। গ্যাস্ট্রিকের কারণে পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব, বমি, গ্যাস, ঢেঁকুর, অরুচি ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। তবে কোমরের দুই পাশে ব্যথার জন্য অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে, যেমন মেরুদণ্ডের সমস্যা, পেশীর সমস্যা, অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সমস্যা ইত্যাদি।
যদি আপনার কোমর ব্যথা হচ্ছে, তাহলে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত। ডাক্তার আপনার ব্যথার কারণ নির্ণয় করে উপযুক্ত চিকিৎসা দিতে পারবেন।
কোমর ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা
কোমর ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা রয়েছে। কোমর ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা নিম্নে বর্ণনা করা হলঃ
হলুদ
হলুদ আপনার রান্নাঘরে সহজলভ্য এবং শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ঐতিহ্যবাহী ওষুধে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। হলুদের প্রধান বায়োঅ্যাকটিভ যৌগ যার নাম কারকিউমিন এর প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য থাকতে পারে, যা কোমর ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসায় শরীরের ব্যথা কমাতে উপকারী হতে পারে।
হলুদ দুধ কোমর ব্যথার জন্য একটি ভাল ঘরোয়া প্রতিকার হতে পারে। আধা কাপ দুধে (গরম/ঠান্ডা) এক চা চামচ হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে ভালো করে মেশান। প্রয়োজনে মিষ্টির জন্য কিছু মধু যোগ করুন। কোমর ব্যথা থেকে সম্ভাব্য উপশমের জন্য রাতে এই হলুদ দুধ পান করুন।
আদা
বাড়িতে পাওয়া সবচেয়ে সাধারণ মসলা হল আদা। এটি রন্ধনসম্পর্কীয় উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়। কোমর ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা ব্যথার তাত্ক্ষণিক প্রতিকার হিসেবে আদা ব্যবহার করা যেতে পারে। আদার মধ্যে জৈব অ্যাকটিভ রাসায়নিক রয়েছে যেমন জিঞ্জেরন এবং জিনজারোল। এই যৌগগুলিতে প্রদাহ-বিরোধী কার্যকলাপ থাকতে পারে যা ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
আদা চা হতে পারে একটি উপকারী পিঠব্যথা ঘরোয়া প্রতিকার। আদা চা তৈরি করতে, আদা রুট ধুয়ে খোসা ছাড়িয়ে একটি ছোট টুকরা নিন। এরপরে, আপনি আদাকে টুকরো টুকরো করে কেটে ফুটন্ত পানিতে যোগ করতে পারেন। প্রায় দশ মিনিট ফুটতে দেওয়ার পর আদা ঠান্ডা করে ছেঁকে নিন। সবশেষে প্রয়োজন হলে মধু বা লেবুর রস যোগ করুন।
গালাঙ্গাল
গালাঙ্গাল পিঠের ব্যথার ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে কারণ এতে প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য থাকতে পারে। গালাঙ্গাল চা তৈরি করতে, আপনার পছন্দের যে কোনও চায়ে গুঁড়ো করা গালাঙ্গাল মূলের একটি ছোট টুকরো যোগ করুন এবং কয়েক মিনিটের জন্য জলে একসাথে সেদ্ধ করুন। তারপর, চা ছেঁকে, চিনি বা মধু যোগ করুন এবং পিঠের ব্যথা দ্রুত উপশমের জন্য সকালে এবং সন্ধ্যায় এই চা পান করুন।
কাইয়েন
কাইয়েন মরিচের শরীরে নিউরোট্রান্সমিটার সৃষ্টিকারী ব্যথার মাত্রা কমানোর ক্ষমতা থাকতে পারে। এছাড়াও, ক্যাপসাইসিনয়েড নামক লাল মরিচের সক্রিয় যৌগ ব্যথা কমানোর ক্ষমতা থাকতে পারে। কেইটেল এট আল দ্বারা পরিচালিত বিভিন্ন মানবিক পরীক্ষায়। ২০২১, লাল মরিচের প্রস্তুতিগুলি টপিকাল প্লাস্টারে ব্যবহার করার সময় ব্যথা হ্রাস দেখায়। আপনি কেয়েন প্লাস্টার টেপ ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত কিনতে পারেন, যা আপনাকে পিঠের ব্যথা থেকে দ্রুত উপশম দিতে পারে।
সাদা উইলো ছাল
সাদা উইলোর ছাল একটি বেদনানাশক ভেষজ হিসাবে বিবেচিত হতে পারে যা পিঠের ব্যথা উপশম করতে সহায়তা করতে পারে। ৩,৪ টি সাদা উইলো বাকল চায়ের আকারে খাওয়া যেতে পারে। উইলো বার্ক চা তৈরি করতে, এক থেকে দুই চা চামচ সাদা উইলোর ছালের টুকরো পানিতে মিশিয়ে পাঁচ থেকে দশ মিনিট ফুটতে দিন। একবার সেদ্ধ হয়ে গেলে, আঁচ বন্ধ করুন এবং এটি প্রায় ৩০ মিনিটের জন্য খাড়া হতে দিন। প্রয়োজন মতো এই চা পান করুন।
ল্যাভেন্ডার
ল্যাভেন্ডারের ফুলগুলি ভেষজ নিরাময়কারী হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে (শান্ততা প্ররোচিত করে) যা স্ট্রেস কমাতে এবং পেশীর টান কমাতে সাহায্য করে। আপনি পিঠের ব্যথার জন্য ল্যাভেন্ডার অপরিহার্য তেল ব্যবহার করতে পারেন। এটি ব্যবহার করার আগে, আপনি আপনার পছন্দের অন্য কোন তেল (নারকেল তেল) এর সাথে ল্যাভেন্ডার এসেনশিয়াল অয়েল পাতলা করতে ভুলবেন না। প্রভাবিত অঞ্চলে প্রয়োগ করা পিঠের ব্যথার জন্য তাত্ক্ষণিক উপশম প্রদান করবে।
আরও জানুন : কোমরের দুই পাশে ব্যথার কারণ, চিকিৎসা ও তার প্রতিকার
কালো কোহোশ মূল
কালো কোহোশ রুটের একটি অ্যান্টিস্পাসমোডিক কার্যকলাপ থাকতে পারে এবং পেশীর খিঁচুনি উপশম করতে পারে, ব্যথা কমাতে পারে এবং সেডেটিভ (শান্তিদায়ক) প্রভাব থাকতে পারে।4 কালো কোহোশ রুটের চা কোমর ব্যথার জন্য একটি উপকারী ঘরোয়া প্রতিকার হতে পারে। এই চা তৈরি করতে, কালো কোহোশের শিকড় নিন এবং সেগুলিকে ফুটন্ত জলে যোগ করুন এবং তারপর তরল না হওয়া পর্যন্ত ২০-৩০ মিনিটের জন্য সিদ্ধ হতে দিন। আপনার পিঠের ব্যথা উপশম করতে এই চা পান করুন।
জীবনধারা পরিবর্তন
শারীরিক ব্যায়াম এবং শিথিলকরণ।
লাইফস্টাইল পরিবর্তনগুলি নিয়মিত ব্যায়াম অন্তর্ভুক্ত করে, যা আপনার পিঠকে নমনীয় এবং শক্তিশালী রাখতে সাহায্য করতে পারে।
কোমর ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা এর শারীরিক ব্যায়াম
নি টু চেস্ট ক্রাচঃ
প্রথমে আপনাকে আপনার পা প্রসারিত করে আপনার পিঠের উপর শুয়ে থাকতে হবে।
একটি হাঁটু বাকাবেন এবং হাঁটু আপনার বুকের দিকে টেনে আনুন।
দুই হাত দিয়ে হাঁটু ধরে আলতো করে বুকের কাছে টানুন।
১৫-৩০ সেকেন্ড ধরে রাখুন, তারপর পা পাল্টান।
প্রতিটি পাশে ২-৩ বার পুনরাবৃত্তি করুন।
ট্রাঙ্ক রোটেশনঃ
প্রথমে আপনাকে আপনার হাঁটু বাকাতে হবে এবং পা মেঝেতে সমতল রেখে আপনার পিঠের উপর শুয়ে থাকতে হবে।
আপনার কাঁধ মেঝেতে রেখে ধীরে ধীরে উভয় হাঁটু একপাশে ফেলে দিন।
তারপর ১৫-৩০ সেকেন্ড সময় নিয়ে ধরে রাখুন ও এরপর শুরুর অবস্থানে ফিরে আসুন।
অন্য দিকে একই পদ্ধতি পুনরাবৃত্তি করুন.
প্রতিটি পাশে ২-৩ ঘূর্ণন সঞ্চালন করুন।
ক্যাট কাউঃ
যেমন আগে উল্লেখ করা হয়েছে, এই অনুশীলনের মধ্যে একটি প্রবাহিত গতিতে বিড়াল ভঙ্গি (পিছনে গোলাকার) এবং গরুর ভঙ্গি (পিঠে খিলান) এর মধ্যে চলার অন্তর্ভুক্ত।
এটি মেরুদণ্ডের নমনীয়তা উন্নত করতে এবং পিঠের নীচের অংশে উত্তেজনা উপশম করতে সহায়তা করে।
পেলভিক টাইল্ডঃ
এই অনুশীলনটি পূর্ববর্তী প্রতিক্রিয়াতেও উল্লেখ করা হয়েছে। এতে আপনার মূল পেশীগুলিকে নিযুক্ত করতে মেঝেতে আপনার নীচের পিঠটি আলতো করে চাপানো জড়িত।
১০-১৫ টি পুনরাবৃত্তি করুন।
ফ্লেক্সিয়ান রোটেশনঃ
প্রথমে আপনাকে আপনার হাঁটু বাকাতে হবে এবং পা মেঝেতে সমতল রেখে আপনার পিঠের উপর শুয়ে থাকতে হবে।
বিপরীত হাঁটুর উপরে একটি গোড়ালি ক্রস করুন।
ক্রস করা গোড়ালি দিয়ে আপনার নিতম্বের পাশে আলতো করে ঘোরান।
তারপর ১৫-৩০ সেকেন্ড সময় নিয়ে ধরে রাখুন ও এরপর শুরুর অবস্থানে ফিরে আসুন।
প্রতিটি পাশে ২-৩ বার পুনরাবৃত্তি করুন।
সাপোর্টেড ব্রিজঃ
আপনার হাঁটু বাকাবেন এবং পা মেঝেতে সমতল রেখে আপনার পিঠের উপর শুয়ে থাকতে হবে।
আপনার নিতম্বের নীচে একটি যোগ ব্লক বা একটি কুশন রাখুন।
আপনার শরীরের সাথে একটি সেতু আকৃতি তৈরি করে, মাটি থেকে আপনার পোঁদ তুলুন।
১৫-৩০ সেকেন্ড ধরে রাখুন।
আপনার পোঁদ নীচের দিকে নীচে করুন।
২-৩ বার পুনরাবৃত্তি করুন।
বেলি ফ্লপ ব্যায়াম:
আপনার হাঁটু বাঁকানো এবং পা মেঝেতে সমতল রেখে আপনার পিঠের উপর শুয়ে পড়ুন।
আপনার নিতম্বের নীচে একটি যোগ ব্লক বা একটি কুশন রাখুন।
আপনার শরীরের সাথে একটি সেতু আকৃতি তৈরি করে, মাটি থেকে আপনার পা তুলুন।
১৫-৩০ সেকেন্ড ধরে রাখুন।
আপনার পা নীচের দিকে নীচে করুন।
২-৩ বার পুনরাবৃত্তি করুন।
বেলি ফ্লপ
এই অনুশীলনটি সাধারণত স্বীকৃত নয়, এবং এটি আপনার নির্দিষ্ট অবস্থার জন্য উপযুক্ত তা নিশ্চিত করা অপরিহার্য। এই ব্যায়াম সম্পর্কে নির্দেশনার জন্য প্রায়ই স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী বা শারীরিক থেরাপিস্টের সাথে পরামর্শ করা ভাল।
সর্বদা এই ব্যায়ামগুলি আপনার স্বাচ্ছন্দ্য সীমার মধ্যে সম্পাদন করুন এবং আপনি যদি সেগুলি করার সময় ব্যথা বা অস্বস্তির কোনও বৃদ্ধি অনুভব করেন তবে অবিলম্বে বন্ধ করুন। যদি আপনার কোমরের উভয় পাশে ক্রমাগত ব্যথা থাকে, তবে আপনার অবস্থার জন্য উপযুক্ত ব্যায়াম এবং চিকিত্সাগুলির সঠিক মূল্যায়ন এবং ব্যক্তিগতকৃত নির্দেশনার জন্য একজন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী বা শারীরিক থেরাপিস্টের সাথে পরামর্শ করা গুরুত্বপূর্ণ।
কোমরের ব্যথা হলে করণীয় অনেক কিছুই আছে। কোমর ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা এর মধ্যে কিছু সাধারণ করণীয় হলো:
- বিশ্রাম নিন। কোমরের ব্যথার ক্ষেত্রে বিশ্রাম সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ব্যথা বাড়লে অতিরিক্ত কাজ করা থেকে বিরত থাকুন।
ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করুন। ব্যথানাশক ওষুধ, যেমন আইবুপ্রোফেন বা অ্যাসিটামিনোফেন, ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে। - গরম বা ঠান্ডা সেঁক দিন। গরম বা ঠান্ডা সেঁক ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
পেশী শিথিল করার ব্যায়াম করুন। পেশী শিথিল করার ব্যায়াম, যেমন স্ট্রেচিং বা থেরাপি, ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে। - যদি এই সাধারণ করণীয়গুলি ব্যথা কমাতে না পারে, তাহলে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত। ডাক্তার আপনার ব্যথার কারণ নির্ণয় করে উপযুক্ত চিকিৎসা দিতে পারবেন।
কোমর ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা , এখানে কিছু নির্দিষ্ট করণীয় দেওয়া হলো:
- ঘুমানোর সময় শক্ত বিছানায় সোজা হয়ে ঘুমান।
- দীর্ঘ সময় দাঁড়ানো বা বসে থাকবেন না।
- ভারী জিনিস তোলার সময় সঠিক ভঙ্গিমা ব্যবহার করুন।
- নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
- কোমরের ব্যথা প্রতিরোধে এই টিপসগুলি অনুসরণ করতে পারেন।
যদিও গবেষণাগুলি প্রদত্ত ভেষজ এবং পিঠের ব্যথার জন্য ঘরোয়া প্রতিকারের উপকারিতা দেখায়, তবে এগুলি অপর্যাপ্ত। অতএব, মানব স্বাস্থ্যের উপর এই ঘরোয়া প্রতিকারগুলির উপকারিতাগুলির প্রকৃত মাত্রা প্রতিষ্ঠা করার জন্য বড় আকারের মানব গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। এইভাবে, এগুলি শুধুমাত্র সতর্কতার সাথে নেওয়া উচিত এবং চিকিত্সার বিকল্প হিসাবে কখনই নয়।
আরও জানুন : কোমর ব্যাথা নিরাময়ে আকুপাংচার যেন এক অনন্য চিকিৎসা
কোমর ব্যথা হলে কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন?
কোমর ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা যা প্রায়শই নিজে থেকেই ভালো হয়ে যায়। তবে, যদি আপনার কোমর ব্যথা তীব্র হয় বা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
কোমর ব্যথা হলে কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন তার কিছু নির্দিষ্ট কারণ হলো:
- ব্যথা এত তীব্র যে আপনি দাঁড়াতে, হাঁটতে বা স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে অসুবিধা হচ্ছে।
- ব্যথা দুই সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হচ্ছে।
- ব্যথায় পায়ে অবশ বা দুর্বলতা অনুভব হচ্ছে।
- আপনার প্রস্রাব বা পায়খানা নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হচ্ছে।আপনার কোমরে ফুলে যাওয়া বা লালভাব আছে।
- আপনি দুর্ঘটনা বা পতনের শিকার হয়েছেন।
- এছাড়াও, যদি আপনার 65 বছর বা তার বেশি বয়স হয় বা আপনার অন্য কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে, তাহলে আপনি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
ডাক্তার আপনার ব্যথার কারণ নির্ণয় করতে একটি শারীরিক পরীক্ষা করবেন এবং আপনার চিকিৎসা ইতিহাস সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবেন। এছাড়াও, তিনি আপনার কোমরের এক্স-রে বা এমআরআই ইমেজিং দিতে পারেন।
আপনার ব্যথার কারণ নির্ণয় করার পরে, ডাক্তার উপযুক্ত চিকিৎসা দিতে পারবেন। ব্যথানাশক ওষুধ, ফিজিওথেরাপি বা ইনজেকশন সহ বিভিন্ন চিকিৎসার বিকল্প রয়েছে।কোমর ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা রয়েছে ।
কোমর ব্যথার ঔষধের নাম
কোমর ব্যথার জন্য অনেক ধরনের ঔষধ পাওয়া যায়। এর মধ্যে কিছু সাধারণ ঔষধ হলো:
ব্যথানাশক ওষুধ: আইবুপ্রোফেন, অ্যাসিটামিনোফেন, ন্যাপ্রোক্সেন ইত্যাদি ব্যথানাশক ওষুধ কোমর ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ওষুধ: ডাইক্লোফেনাক, ইবুপ্রোফেন, ন্যাপ্রোক্সেন ইত্যাদি অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ কোমর ব্যথার সাথে যুক্ত প্রদাহ কমাতে সাহায্য করতে পারে।
স্টেরয়েড: স্টেরয়েড ওষুধ, যেমন ডেক্সামেথাসন, কোমর ব্যথার সাথে যুক্ত প্রদাহ এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে। তবে, স্টেরয়েডের কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে, যেমন ওজন বৃদ্ধি, উচ্চ রক্তচাপ এবং হাড়ের ক্ষতি।
ফিজিওথেরাপি: ফিজিওথেরাপি কোমর ব্যথা কমাতে এবং পেশী শক্তি এবং নমনীয়তা উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।
ইনজেকশন: ইনজেকশন, যেমন কর্টিকোস্টেরয়েড বা অ্যানেস্থেটিক, কোমর ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
কোমর ব্যথার জন্য কোন ঔষধ সবচেয়ে উপযুক্ত তা নির্ভর করে আপনার ব্যথার কারণ এবং তীব্রতার উপর। আপনার ডাক্তার আপনার ব্যথার কারণ নির্ণয় করে উপযুক্ত চিকিৎসা দিতে পারবেন।
কোমর ব্যথার জন্য ঔষধ সেবনের পাশাপাশি, আপনি কিছু ঘরোয়া প্রতিকারও চেষ্টা করতে পারেন। কোমর ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা রয়েছে। যেমন:
বিশ্রাম: কোমর ব্যথার সময় বিশ্রাম নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
গরম বা ঠান্ডা সেঁক: গরম বা ঠান্ডা সেঁক কোমর ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
পেশী শিথিলকারী ব্যায়াম: পেশী শিথিলকারী ব্যায়াম কোমর ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
আপনার যদি কোমর ব্যথা হয়, তাহলে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা গুরুত্বপূর্ণ। ডাক্তার আপনার ব্যথার কারণ নির্ণয় করে উপযুক্ত চিকিৎসা দিতে পারবেন।
এখানে কিছু নির্দিষ্ট ঔষধের নাম দেওয়া হলো:
ব্যথানাশক ওষুধ:
- আইবুপ্রোফেন (Advil, Motrin IB)
- অ্যাসিটামিনোফেন (Tylenol)
- ন্যাপ্রোক্সেন (Aleve)
- অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ওষুধ:
- ডাইক্লোফেনাক (Voltaren, Cataflam)
- ইবুপ্রোফেন (Advil, Motrin IB)
- ন্যাপ্রোক্সেন (Aleve)
- স্টেরয়েড
- ডেক্সামেথাসন (Dexamethasone)
- ইনজেকশন
- কর্টিকোস্টেরয়েড
- অ্যানেস্থেটিক
এই ঔষধগুলি সাধারণত ওষুধের দোকানে বিক্রি হয়। তবে, আপনি যদি এই ঔষধগুলি গ্রহণের ব্যাপারে কোন প্রশ্ন বা উদ্বেগ থাকে, তাহলে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
কোমর ব্যথার চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন বিকল্প রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে:
- ওষুধ
- শারীরিক থেরাপি
- ইনজেকশন
- অস্ত্রোপচার
- আপনার ডাক্তার আপনার নির্দিষ্ট পরিস্থিতির জন্য সেরা চিকিৎসার পরিকল্পনা তৈরি করতে সক্ষম হবেন।
তাপ কি কোমর ব্যথার জন্য ভাল?
তাপ থেরাপি তীব্র এবং দীর্ঘস্থায়ী কোমর ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে। পেশী শিথিল করতে, ব্যথা কমাতে সাহায্য করার জন্য একজন ব্যক্তির তাদের কোমরে তাপ প্রয়োগ করা উচিত। পেশীগুলিতে তাপ প্রয়োগের ফলে রক্তনালীগুলি প্রসারিত হতে পারে, সঞ্চালন উন্নত হতে পারে। এটি কোনো ক্ষতিগ্রস্ত পেশী নিরাময় প্রচার করে।
কোমর ব্যথার কারণ কী ?
কোমর ব্যথা খুবই সাধারণ। এটি পিছনের পেশী বা টেন্ডনে স্ট্রেন (আঘাত) থেকে হতে পারে। অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে আর্থ্রাইটিস, কাঠামোগত সমস্যা এবং ডিস্কের আঘাত। ব্যথা প্রায়ই বিশ্রাম, শারীরিক থেরাপি এবং ওষুধের মাধ্যমে ভাল হয়ে যায়।
লিখেছেন-
ডাঃ সাইফুল ইসলাম, পিটি
বিপিটি ( ঢাবি ) , এমপিটি ( অর্থোপেডিকস ) – এন.আই.পি.এস , ইন্ডিয়া
পিজি.সি. ইন আকুপাংচার , ইন্ডিয়া
স্পেশাল ট্রেইন্ড ইন ওজন থেরাপি , ইউ.এস.এ এবং ওজোন ফোরাম , ইন্ডিয়া ।
ফিজিওথেরাপি কনসালট্যান্ট , ভিশন ফিজিওথেরাপি সেন্টার ।
পরামর্শ পেতে – 01760-636324 , 01932-797229 (সকাল ৯.০০ থেকে রাত ৯.০০ টা)
ফেসবুকঃ ভিশন ফিজিওথেরাপি সেন্টার
এপয়েন্টম্যান্ট নিতে ক্লিক করুনঃ
https://visionphysiotherapy.com/appoi..