পিঠে ব্যথা কি?
পিঠে ব্যথা হলো পিঠের যেকোনো অংশে ব্যথা বা অস্বস্তি। গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথা, বিশেষ করে পিঠের মাঝখানে ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা। বাচ্চার বর্ধনশীল ওজন, হরমোনের পরিবর্তন এবং শরীরের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিবর্তন এই ব্যথার প্রধান কারণ। এই ব্যথা হালকা থেকে তীব্র পর্যন্ত হতে পারে এবং দৈনন্দিন কাজকর্মে বাধা দেয়। গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথার ব্যবস্থাপনার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত, কারণ সঠিক ব্যায়াম, ভালো ভঙ্গি এবং যথাযথ বিশ্রাম এই সমস্যা মোকাবেলায় সাহায্য করতে পারে। জীবনের কোনো এক সময়ে প্রায় সকল মানুষকে এই ব্যথার কারণে ভুগতে দেখা যায়। গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথা হলে করণীয় কি তা আমাদের জানতে হবে। পিঠে ব্যথার তীব্রতা হালকা থেকে তীব্র পর্যন্ত হতে পারে এবং এটি ক্ষণস্থায়ী বা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
অভিজ্ঞ ফিজিওথেরাপিস্টদের মাধ্যমে ভিশন ফিজিওথেরাপি সেন্টারে উন্নতমানের সেবা পেতে আপনার এপয়েন্টমেন্ট টি এখনই নিশ্চিত করুন অথবা +8801932-797229 এই নম্বরে কল করুন।
ফিজিওথেরাপির উপকারিতা, ফিজথেরাপিস্টের কাজ ইত্যাদি জানতে আমাদের এই পোস্টটি পড়ে নিন।
গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথার লক্ষণ কি কি?
গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথার লক্ষণগুলি নিম্নরূপ-
পিঠের নিচের অংশে ব্যথা
পিঠের নিচের অংশে ব্যথা, বিশেষ করে কোমরের দিকে, এক অত্যন্ত সাধারণ সমস্যা। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ভুল ভঙ্গি, অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম বা কোন আঘাতের কারণে এই ব্যথা অনুভূত হতে পারে। অনেকেই এই ব্যথাকে হালকাভাবে নিয়ে থাকলেও, দীর্ঘদিন ধরে এই ব্যথা থাকলে তা দৈনন্দিন কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। পেশীর টান, ডিস্কের সমস্যা, বা অন্য কোনো কারণে এই ব্যথা হতে পারে। সমস্যাটি গুরুতর না হলে ঘরোয়া কিছু উপায়ে এই ব্যথা কমানো সম্ভব। তবে, যদি ব্যথা বেশি হয় বা দীর্ঘদিন ধরে থাকে, তাহলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
পিঠের মাঝখানে বা উপরের দিকে ব্যথা
পিঠের ব্যথা সাধারণত নিচের অংশে, বিশেষ করে কোমরের দিকে বেশি হয়। তবে অনেক সময় ব্যথাটি পিঠের মাঝখানে বা এমনকি উপরের দিকে, ঘাড়ের কাছে পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই ধরনের ব্যথার কারণ হিসেবে পেশীর টান, ভুল ভঙ্গি, দীর্ঘক্ষণ একই অবস্থানে থাকা, আঘাত, বা মেরুদণ্ডের কোনো সমস্যা হতে পারে।
পিঠের উপরের অংশে ব্যথা অনেক সময় ঘাড়ের ব্যথার সাথেও যুক্ত থাকে। দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটারে কাজ করা, মোবাইল ফোন ব্যবহার করা বা ভারী জিনিস মাথায় করে বহন করা এই ধরনের ব্যথার অন্যতম কারণ।
ব্যথার তীব্রতা
পিঠের ব্যথা সবার ক্ষেত্রে একই রকম হয় না। কারো কারো ক্ষেত্রে ব্যথাটি হালকা টান টান অনুভূত হতে পারে, আবার কারো কারো ক্ষেত্রে তা এতই তীব্র হতে পারে যে দৈনন্দিন কাজকর্মে বাধা দেয়। ব্যথার তীব্রতা ব্যক্তিভেদে এবং ব্যথার কারণের উপর নির্ভর করে।
কিছু ক্ষেত্রে ব্যথা সারাদিন ধরে থাকতে পারে, আবার অন্য ক্ষেত্রে কেবলমাত্র নির্দিষ্ট কিছু কাজ করার সময় বা শারীরিক পরিশ্রমের পরেই ব্যথা বেড়ে যেতে পারে। ব্যথার সাথে অন্যান্য লক্ষণও দেখা দিতে পারে, যেমন পেশীর শক্ত হয়ে যাওয়া, অসাড়তা, বা দুর্বলতা।
ভিশন ফিজিওথেরাপি সেন্টারে উন্নতমানের সেবা পেতে আপনার এপয়েন্টমেন্ট টি এখনই নিশ্চিত করুন অথবা +8801932-797229 এই নম্বরে কল করুন।
ব্যথার সময়কাল
পিঠের ব্যথা সবসময় একরকম থাকে না। কারো কারো ক্ষেত্রে ব্যথাটি সারা দিন ধরেই অনুভূত হয়, যাকে আমরা ধ্রুবক ব্যথা বলি। আবার অন্য ক্ষেত্রে ব্যথাটি নির্দিষ্ট কিছু কাজ করার সময় বা শারীরিক পরিশ্রমের পরেই বেড়ে যেতে পারে। যেমন, কোনো ভারী জিনিস তোলা, দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা, বা বসে থাকার পরে হঠাৎ উঠে দাঁড়ানোর সময় ব্যথা অনুভূত হতে পারে। এই ধরনের ব্যথা সাধারণত কার্যকলাপের সাথে সম্পর্কিত হয়।
অন্যান্য লক্ষণ
পিঠের ব্যথা একা একা না এসে অনেক সময় অন্যান্য লক্ষণ নিয়ে আসতে পারে। এই লক্ষণগুলো ব্যথার কারণ এবং তীব্রতার উপর নির্ভর করে।
পেশীর শক্ত হয়ে যাওয়াঃ পিঠের ব্যথার সাথে অনেক সময় পেশীগুলো শক্ত হয়ে যায়। এই শক্তির কারণে পিঠে টান অনুভূত হতে পারে এবং আন্দোলন সীমিত হয়ে যেতে পারে।
অসাড়তা এবং অবশতাঃ কিছু ক্ষেত্রে পিঠের ব্যথার সাথে অসাড়তা বা অবশতার মতো লক্ষণও দেখা দিতে পারে। এটি সাধারণত মেরুদণ্ডের স্নায়ুতে চাপ পড়ার কারণে হয়। অসাড়তা বা অবশতা হাত, পা বা অন্য কোনো অংশে অনুভূত হতে পারে।
ভিশন ফিজিওথেরাপির যাবতীয় আনুসাঙ্গিক সকল খরচ সম্পর্কে জানতে আমাদের এই পোস্টটি পড়ুন
গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথার কারণ
গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা। প্রায় 50-70% গর্ভবতী মহিলারা তাদের গর্ভাবস্থায় কোনো না কোনো সময়ে পিঠে ব্যথা অনুভব করেন।গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথা হলে করণীয় কি তা আমাদের জানতে হবে। গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথার অনেকগুলি কারণ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে:
শরীরের ওজন বৃদ্ধি
গর্ভাবস্থায় একজন মহিলার শরীরের ওজন স্বাভাবিকভাবেই বৃদ্ধি পায়। জরায়ু এবং ভ্রূণের ধীরে ধীরে বড় হওয়ার সাথে সাথে এই ওজন বৃদ্ধি ঘটে। এই অতিরিক্ত ওজন পিঠের উপর চাপ সৃষ্টি করে। পিঠের পেশী এবং জয়েন্টগুলিকে এই অতিরিক্ত ওজন ধরে রাখতে হয়, ফলে পিঠে ব্যথা, টান এবং অস্বস্তি অনুভূত হতে পারে। বিশেষ করে পিঠের নিচের অংশে এই ব্যথা বেশি হয়। ওজন বৃদ্ধির পাশাপাশি, গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তন এবং ভঙ্গির পরিবর্তনও পিঠের ব্যথার কারণ হতে পারে।
ভঙ্গিগত পরিবর্তন
গর্ভাবস্থায় একজন মহিলার শরীর অনেক পরিবর্তন হয়। এই পরিবর্তনগুলোর মধ্যে একটি হল ভঙ্গিগত পরিবর্তন। বাচ্চা বড় হওয়ার সাথে সাথে পেটের ওজন বৃদ্ধি পায় এবং এর ফলে শরীরের ভর কেন্দ্র সামনের দিকে সরে যায়। এই পরিবর্তনের কারণে মহিলারা সাধারণত পিছনে ঝুঁকে দাঁড়ান বা বসেন। এই ভুল ভঙ্গি পিঠের পেশীগুলিকে অস্বাভাবিকভাবে কাজ করতে বাধ্য করে। ফলে পিঠের পেশীতে টান পড়ে এবং ব্যথা অনুভূত হয়। এই ব্যথা সাধারণত কোমরের নিচের অংশে বেশি হয়।
হরমোনাল পরিবর্তন
গর্ভাবস্থায় একজন মহিলার শরীরে অনেক পরিবর্তন হয়। এই পরিবর্তনগুলোর মধ্যে একটি হল হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি। প্রোজেস্টেরন নামক একটি হরমোন গর্ভাবস্থায় অনেক বেশি পরিমাণে নিঃসৃত হয়। এই হরমোন শরীরকে গর্ভধারণের জন্য প্রস্তুত করতে সাহায্য করে। কিন্তু একই সাথে প্রোজেস্টেরন পেশীগুলিকে শিথিল করে দেয়। ফলে পিঠের পেশীগুলোও দুর্বল হয়ে পড়তে পারে এবং এর ফলে পিঠে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। এই দুর্বলতা পিঠের পেশীগুলিকে ভালোভাবে কাজ করতে বাধা দেয় এবং ব্যথার কারণ হয়।
পেলভিসের পরিবর্তন
গর্ভাবস্থায় শরীরে অনেক পরিবর্তন ঘটে। এই পরিবর্তনগুলোর মধ্যে একটি হল পেলভিসের লিগামেন্টগুলো শিথিল হয়ে যাওয়া। শরীর প্রসবের জন্য প্রস্তুত হওয়ার কারণে এই পরিবর্তন ঘটে। লিগামেন্টগুলো শিথিল হওয়ার ফলে পেলভিসের জয়েন্টগুলোতে অস্থিরতা তৈরি হয় এবং পেলভিসের উপর চাপ বেড়ে যায়। এই অতিরিক্ত চাপের কারণে পিঠের নিচের অংশে এবং পেলভিসের চারপাশে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। এই ব্যথা সাধারণত দাঁড়ানো, বসা বা হাঁটার সময় বেড়ে যায়।
গর্ভাবস্থায় পিঠের ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা। বাচ্চা পেটে বড় হওয়ার সাথে সাথে শরীরের ওজন বৃদ্ধি, ভঙ্গি পরিবর্তন এবং হরমোনের প্রভাবের কারণে এই ব্যথা হয়। ব্যথাটি মাঝারি থেকে গুরুতর হতে পারে এবং দৈনন্দিন কাজকর্মে বাধা দেয়। দাঁড়ানো, হাঁটা, ঘুমাতে অসুবিধা হতে পারে। গর্ভাবস্থার শেষের দিকে এই ব্যথা আরও তীব্র হতে পারে।
পিঠে ব্যথা কিসের লক্ষণ ও পিঠে ব্যথা হলে কি কি করণীয় তা বিস্তারিত জানতে এই পোস্টটি পড়ুন।
গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথা হলে করণীয়
গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথার প্রতিরোধ এর উপায় কি কি?
গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা। প্রায় 50-70% গর্ভবতী মহিলারা তাদের গর্ভাবস্থায় কোনো না কোনো সময়ে পিঠে ব্যথা অনুভব করেন। গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথা প্রতিরোধের জন্য নিম্নলিখিত টিপসগুলি অনুসরণ করা যেতে পারে।
সঠিক ভঙ্গি বজায় রাখুন
গর্ভাবস্থায় পিঠের ব্যথা কমাতে সঠিক ভঙ্গি বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক ভঙ্গি পিঠের উপর চাপ কমাতে সাহায্য করে এবং ব্যথা উপশম করতে পারে।
দাঁড়ানো
- পিঠ সোজা রাখুনঃ আপনার পিঠকে সোজা রাখার চেষ্টা করুন।
- কাঁধ পিছনে টানুনঃ কাঁধগুলোকে পিছনে টানুন যাতে পিঠ সোজা থাকে।
- মাথা উঁচু রাখুনঃ মাথা সোজা রাখুন এবং চিবুককে বুকের দিকে আনবেন না।
হাঁটা
- পায়ের বুড়ো আঙ্গুলের উপর ভর দিনঃ হাঁটার সময় পায়ের বুড়ো আঙ্গুলের উপর ভর দিয়ে হাঁটুন।
- পিঠ সোজা রাখুনঃ হাঁটার সময়ও পিঠ সোজা রাখুন।
বসা
- পিঠ সোজা রাখুনঃ বসার সময়ও পিঠ সোজা রাখুন।
- পা মাটিতে রাখুনঃ দুই পা মাটিতে সমানভাবে রাখুন।
- হাঁটু কোমর থেকে সোজা রাখুনঃ হাঁটুকে কোমরের সমান বা একটু উঁচু রাখুন।
অতিরিক্ত টিপস
- কোনো কিছু তোলার সময়ঃ কোনো কিছু তোলার সময় হাঁটু বাঁকিয়ে তুলুন এবং পিঠ সোজা রাখুন।
- উঁচু জিনিস নেওয়ার সময়ঃ উঁচু জিনিস নেওয়ার জন্য চেয়ার বা সিঁড়ির সাহায্য নিন।
- নিয়মিত বিরতি নিনঃ দীর্ঘক্ষণ একই অবস্থানে না থেকে মাঝে মাঝে বিরতি নিন এবং হাঁটুন।
সঠিক ভঙ্গি বজায় রাখা গর্ভাবস্থায় পিঠের ব্যথা কমাতে সাহায্য করলেও, যদি আপনার ব্যথা অসহ্য হয়, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
কোমর ব্যথা নিয়ে আপনার বিস্তারিত কিছু জানার থাকলে এই পোস্টটি পড়ে নিন।
নিয়মিত ব্যায়াম করুন
গর্ভাবস্থায় নিয়মিত ব্যায়াম পিঠের ব্যথা কমাতে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্যায়াম পিঠের পেশীগুলিকে শক্তিশালী করে, ভঙ্গি উন্নত করে এবং ব্যথার প্রকোপ কমাতে সাহায্য করে।
গর্ভাবস্থায় নিরাপদ ব্যায়ামের কিছু উদাহরণ:
- সাঁতারঃ সাঁতার একটি দুর্দান্ত কার্যকলাপ যা পুরো শরীরকে ব্যায়াম করার পাশাপাশি পিঠের পেশীগুলিকে শক্তিশালী করে। পানির বাহুবল পেটের উপর চাপ কমিয়ে দেয় এবং পিঠের পেশীগুলিকে আরাম দেয়।
- ইয়োগাঃ ইয়োগার বিভিন্ন আসন পিঠের পেশীগুলিকে প্রসারিত করে এবং শক্তিশালী করে। এছাড়াও ইয়োগা শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুশীলন শরীরকে শান্ত করে এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
- পিলেটসঃ পিলেটস একটি নিম্ন-প্রভাবের ব্যায়াম যা কোর পেশী এবং পিঠের পেশীগুলিকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। এটি ভঙ্গি উন্নত করতে এবং ব্যথা কমাতেও সহায়তা করে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
- গর্ভাবস্থায় কোনো ধরনের ব্যায়াম শুরু করার আগে অবশ্যই আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
- ব্যায়ামের তীব্রতা ধীরে ধীরে বাড়ান।
- যদি কোনো ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভূত হয়, তাহলে অবিলম্বে ব্যায়াম বন্ধ করে বিশ্রাম নিন।
হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসা ও হার্ট অ্যাটাক রোগীর খাবারের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এই লেখাটি পড়ুন।
সুষম খাবার খান
গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথা অনেক মহিলারই সাধারণ সমস্যা। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সুষম খাবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপায়। সুষম খাবার শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে, যা পিঠের উপর চাপ কমাতে সাহায্য করে। আপনি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন এবং পিঠে ব্যথা অনুভব করেন, তাহলে আপনার খাদ্যতালিকায় কিছু পরিবর্তন আনতে পারেন।
স্বাস্থ্যকর খাবারের টিপসঃ
- ফল, শাকসবজি এবং পুরো শস্য: এই খাবারগুলো ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থে সমৃদ্ধ, যা আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও, এই খাবারগুলোতে ফাইবার থাকে, যা আপনাকে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে এবং ওজন বাড়তে বাধা দেয়।
- প্রোটিন: মাছ, মাংস এবং ডালের মতো খাবারে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে। প্রোটিন আপনার পেশীগুলোকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে এবং পিঠের ব্যথা কমাতে সহায়তা করে।
ভিশন ফিজিওথেরাপি সেন্টারে অভিজ্ঞ ফিজিওথেরাপিস্টদের মাধ্যমে উন্নতমানের সেবা পেতে আপনার এপয়েন্টমেন্ট টি এখনই নিশ্চিত করুন অথবা +8801932-797229 এই নম্বরে কল করুন।
পর্যাপ্ত বিশ্রাম
গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথা অনেক মহিলারই সাধারণ সমস্যা। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া খুবই জরুরি। পর্যাপ্ত বিশ্রাম পেশীগুলিকে নিরাময় করতে এবং ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করে।
বিশ্রাম নেওয়ার টিপসঃ
- দৈনিক ঘুম: প্রতি রাতে ৭-৮ ঘন্টা ঘুমাতে চেষ্টা করুন।
- দিনের বিশ্রাম: দিনের মধ্যে ছোট ছোট বিশ্রাম নিন। যখনই ক্লান্ত বোধ করেন, তখনই বিশ্রাম নিন।
- স্বাচ্ছন্দ্যময় অবস্থান: ঘুমাতে যাওয়ার সময় একটি আরামদায়ক এবং সমর্থনকারী বিছানা ব্যবহার করুন। আপনার পেটের নিচে এবং হাঁটুর মাঝে একটি ছোট বালিশ রাখতে পারেন।
গর্ভাবস্থায় শরীরকে অনেক কাজ করতে হয়। বাচ্চার বৃদ্ধির সাথে সাথে শরীরের ওজন বাড়ে এবং গুরুত্ব কেন্দ্র পরিবর্তিত হয়। এর ফলে পেশীগুলোতে টান পড়ে এবং ব্যথা হয়। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিয়ে আপনি এই টান কমাতে পারেন।
গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথার প্রতিকার এর উপায় কি কি?
গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথা অনেক মহিলারই সাধারণ সমস্যা। বাচ্চার ওজন বৃদ্ধি, শরীরের কেন্দ্রবিন্দুর পরিবর্তন এবং হরমোনের প্রভাব এই ব্যথার প্রধান কারণ। তবে চিন্তার কোন কারণ নেই। কয়েকটি সহজ উপায়ে আপনি এই ব্যথাকে অনেকটাই কমাতে পারেন। গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথা অনেক মহিলারই সাধারণ সমস্যা। বাচ্চার বর্ধনশীল ওজন, শরীরের ভারসাম্যের পরিবর্তন এবং হরমোনের প্রভাবে এই ব্যথা আরও বাড়তে পারে। তবে চিন্তার কোনো কারণ নেই। সঠিক ভঙ্গি বজায় রাখা, নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করা, গরম বা ঠান্ডা সেক দেওয়া, আরামদায়ক বিছানা ব্যবহার করা, হালকা ম্যাসাজ করা এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া এই ব্যথা অনেকটাই কমাতে সাহায্য করতে পারে। সঠিক জুতা পরা এবং অতিরিক্ত ওজন কমানোও উপকারী হতে পারে। যদি ব্যথা অসহ্য হয় বা অন্য কোনো সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
ভিশন ফিজিওথেরাপি সেন্টারে সেরা মানের সেবা পেতে আপনার এপয়েন্টমেন্ট টি এখনই নিশ্চিত করুন অথবা +8801932-797229 এই নম্বরে কল করে আপনার বিস্তারিত সমস্যার কথাটি জানান।
গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা কি?
গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথা অনেক মহিলারই সাধারণ সমস্যা। বাচ্চার বৃদ্ধি এবং শরীরের ওজন বৃদ্ধির কারণে এই ব্যথা হতে পারে। ঘরোয়া কিছু উপায়ে এই ব্যথা কমানো সম্ভব। গরম বা ঠান্ডা সংকোচন, ম্যাসাজ, একুপাঙ্কচার, পর্যাপ্ত বিশ্রাম, স্বাস্থ্যকর খাবার, পর্যাপ্ত পানি খাওয়া এবং সঠিক ভঙ্গি বজায় রাখা এই ব্যথার উপশমে সাহায্য করতে পারে। তবে, যদি ব্যথা তীব্র হয় বা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
গরম বা ঠান্ডা সংকোচন প্রয়োগ করুনঃ গরম বা ঠান্ডা সংকোচন প্রয়োগ করা ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করতে পারে। গরম সংকোচন পেশীগুলিকে শিথিল করতে এবং ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করে, যখন ঠান্ডা সংকোচন প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
ম্যাসেজ বা আকুপাঙ্কচার চেষ্টা করুনঃ ম্যাসেজ বা আকুপাঙ্কচার পেশীগুলিকে শিথিল করতে এবং ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করতে পারে।
প্রয়োজনে সাহায্য নিনঃ ভারী জিনিস তোলার সময় সাহায্য নিন।
গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথার জন্য ঘরোয়া চিকিৎসার পাশাপাশি, নিম্নলিখিত টিপসগুলি অনুসরণ করাও সাহায্য করতে পারে:
পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিনঃ পর্যাপ্ত বিশ্রাম পেশীগুলিকে নিরাময় করতে এবং ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করতে পারে।
স্বাস্থ্যকর খাবার খানঃ স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করতে পারে, যা পিঠের উপর চাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে।
পর্যাপ্ত পানি পান করুনঃ পর্যাপ্ত পানি পান করা পেশীগুলিকে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে, যা ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করতে পারে।
গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথার জন্য ঘরোয়া চিকিৎসাগুলির মধ্যে কিছু কার্যকর হতে পারে। তবে, যদি ব্যথা তীব্র হয় বা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন।
ভিশন ফিজিওথেরাপি সেন্টারে সেরা ফিজিওথেরাপি সেবা নিতে আপনার এপয়েন্টমেন্ট টি আজই নিশ্চিত করুন অথবা +8801932-797229 এই নম্বরে কল করে বিস্তারিতভাবে আপনার সমস্যা সম্পর্কে জানান।
গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথার ওষুধের নাম কি?
গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথা হলে করণীয় কি তা আমাদের জানতে হবে।গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথার জন্য বিভিন্ন ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে, গর্ভাবস্থায় কিছু ওষুধ ব্যবহার করা নিরাপদ নয়। তাই, গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথার জন্য ওষুধ ব্যবহার করার আগে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন।
গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথার জন্য ব্যবহৃত কিছু ওষুধের মধ্যে রয়েছেঃ
অ্যাসিটামিনোফেনঃ অ্যাসিটামিনোফেন একটি সাধারণ ব্যথানাশক যা গর্ভাবস্থায় ব্যবহার করা নিরাপদ বলে মনে করা হয়।
ওভার-দ্য-কাউন্টার ব্যথানাশকঃ ওভার-দ্য-কাউন্টার ব্যথানাশক, যেমন ইবুপ্রোফেন বা ন্যাপ্রোক্সেন, গর্ভাবস্থায় ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে, এই ওষুধগুলি গর্ভের উপর প্রভাব ফেলতে পারে, তাই আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলা গুরুত্বপূর্ণ।
প্রেসক্রিপশন ব্যথানাশকঃ কিছু প্রেসক্রিপশন ব্যথানাশক, যেমন কোডেইন, গর্ভাবস্থায় ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে, এই ওষুধগুলি গর্ভের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে, তাই আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলা গুরুত্বপূর্ণ।
গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথার জন্য ব্যবহৃত কিছু অন্যান্য ওষুধের মধ্যে রয়েছে:
মাইওরিল্যাক্সেন্টসঃ মাইওরিল্যাক্সেন্টস পেশী শিথিল করতে সাহায্য করে।
স্টেরয়েডসঃ স্টেরয়েডস প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
ফিজিওথেরাপিঃ ফিজিওথেরাপি পিঠের পেশীগুলিকে শক্তিশালী করতে এবং ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করতে পারে।
আপনার ডাক্তার আপনার অবস্থার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত চিকিৎসার পরিকল্পনা তৈরি করতে সাহায্য করতে পারেন।
সেরা মানের ফিজিওথেরাপি সেবা নিতে আপনার এপয়েন্টমেন্ট টি আজই নিশ্চিত করুন অথবা +8801932-797229 এই নম্বরে কল করে বিস্তারিতভাবে আপনার সমস্যা সম্পর্কে আমাদের জানান।
গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথা হলে কখন ডাক্তারের শরণাপন্ন হবো?
গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা। তবে, কিছু ক্ষেত্রে, পিঠে ব্যথা গুরুতর অবস্থার লক্ষণ হতে পারে। তাই, নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া গুরুত্বপূর্ণ:
- যদি ব্যথা তীব্র হয় বা দীর্ঘস্থায়ী হয়।
- যদি ব্যথা আপনার দৈনন্দিন কার্যকলাপগুলিকে ব্যাহত করে।
- যদি ব্যথার সাথে সাথে অন্যান্য লক্ষণ দেখা দেয়, যেমন জ্বর, প্রস্রাবে রক্ত বা যোনি থেকে রক্তপাত।
- গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথার জন্য অনেকগুলি সম্ভাব্য কারণ রয়েছে। আপনার ডাক্তার আপনার ব্যথার কারণ নির্ণয় করতে এবং আপনার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত চিকিৎসার পরিকল্পনা তৈরি করতে সাহায্য করতে পারেন।
গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথার জন্য ডাক্তারের কাছে যাওয়ার সময় নিম্নলিখিত তথ্যগুলি আপনার সাথে নিয়ে যাওয়া উচিত:
- আপনার ব্যথার বিবরণঃ যেমন এটি কখন শুরু হয়েছিল, এটি কীভাবে অনুভব হয় এবং এটি কীভাবে আপনার দৈনন্দিন জীবনকে প্রভাবিত করে।
- আপনার অন্যান্য লক্ষণঃ যেমন জ্বর, প্রস্রাবে রক্ত বা যোনি থেকে রক্তপাত।
- আপনার বর্তমান ওষুধের তালিকা।
- আপনার পারিবারিক ইতিহাস।
আপনার ডাক্তার আপনার ব্যথার কারণ নির্ণয় করতে শারীরিক পরীক্ষা, রক্ত পরীক্ষা বা ইমেজিং পরীক্ষার মতো বিভিন্ন পরীক্ষা করতে পারেন।
গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথার ব্যায়াম কি কি ?
গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথা হলে করণীয় কি তা আমাদের জানতে হবে।গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা। পিঠের পেশীগুলিকে শক্তিশালী করার এবং পিঠের উপর চাপ কমাতে সাহায্য করার জন্য ব্যায়াম করা গুরুত্বপূর্ণ।
গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথার জন্য কিছু নিরাপদ ব্যায়াম হল:
সাঁতার: সাঁতার একটি দুর্দান্ত ব্যায়াম যা পিঠের পেশীগুলিকে শক্তিশালী করতে এবং ওজন বহন করে।
ইয়োগা: ইয়োগা পিঠের পেশীগুলিকে প্রসারিত করতে এবং শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
পিলেটস: পিলেটস পিঠের পেশীগুলিকে শক্তিশালী করতে এবং ভঙ্গি উন্নত করতে সাহায্য করে।
গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথার জন্য কিছু নির্দিষ্ট ব্যায়াম হলঃ
ক্যাট-কাউ
কীভাবে করবেনঃ
- চার হাত এবং হাঁটুতে শুরু করুন, আপনার পিঠ সোজা রাখুন।
- আপনার পিঠকে একটি নরম বক্ররেখায় বক্র করুন, আপনার পেটকে আপনার দিকে টেনে আনুন।
- আপনার পিঠকে একটি বক্ররেখায় সোজা করুন, আপনার মেরুদণ্ডকে প্রসারিত করুন।
8-10 বার পুনরাবৃত্তি করুন।
পিঠের প্রসারণ ব্যায়াম
কীভাবে করবেনঃ
- আপনার পিঠ সোজা করে একটি মেঝেতে শুয়ে পড়ুন।
- আপনার একটি পা বাঁকিয়ে আপনার হাঁটুকে আপনার বুকের কাছে আনুন।
- আপনার অন্য পা সোজা রাখুন।
- আপনার বাঁকানো পায়ের পায়ের আঙ্গুলগুলি আপনার বাহু দিয়ে ধরুন।
- আপনার পিঠকে একটি বক্ররেখায় বক্র করুন, আপনার পায়ের দিকে টানুন।
৮-১০ বার পুনরাবৃত্তি করুন, তারপর অন্য পা দিয়ে পুনরাবৃত্তি করুন।
গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথার ব্যায়াম করার সময় নিম্নলিখিত টিপসগুলি অনুসরণ করুনঃ
- আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন। আপনার ডাক্তার আপনাকে আপনার অবস্থার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ব্যায়ামগুলি নির্ধারণ করতে সাহায্য করতে পারেন।
- যদি আপনার ব্যথা হয় তবে ব্যায়াম বন্ধ করুন।
- ধীরে ধীরে শুরু করুন। আপনার শরীরকে নতুন ব্যায়ামগুলিতে অভ্যস্ত হতে দিন।
- নিয়মিত ব্যায়াম করুন। সপ্তাহে অন্তত তিনবার 30 মিনিট ব্যায়াম করুন।
- গর্ভাবস্থায় পিঠে ব্যথার ব্যায়াম পিঠের উপর চাপ কমাতে এবং ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করতে পারে। তবে, আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলা গুরুত্বপূর্ণ যাতে তারা নিশ্চিত করতে পারে যে ব্যায়ামগুলি আপনার অবস্থার জন্য নিরাপদ।